সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ব্যান্ডের গান কে ভালবাসি, কোনো ব্যক্তি কে নয়

বাবনা ভাই, সঞ্জয় ভাইয়ের মতো ভোকালরা চলে গেলেন।
ওয়ারফেজের ভক্তরা তখন দিশেহারা প্রায়।
সঞ্জয় ভাইয়ের জায়গায় কাউকে তখন ভাবাই যাচ্ছিলনা, অনেকেই হতাশ হয়ে পরেছে। কেউ কেউ বলতে শুরু করেছে ওয়ারফেজের ইতিহাস এখানেই শেষ।
বলার যথেষ্ট কারনও ছিল, সঞ্জয় ভাইয়ের মতো ভোকাল বাংলা ব্যান্ড ইতিহাসে বিরল.!.!.!.!.

সঞ্জয় ভাই চলে যাওয়ার পর মিজান আর বালাম ভাই ডুয়েট ভোকালে ২০০০ সালে ওয়ারফেজ রিলিজ করলো "অালো" এ্যালবাম যা সুপারহিট হয়েছিল।
এরপর মিজান ভাই ওয়ারফেজ ছেড়ে দিলেন।
বালাম ভাইকে ভোকালে রেখে ২০০৩ সালে "মহারাজ" নামে কালজয়ী এক এ্যালবাম রিলিজ দিয়েও যেন ভক্তদের মন ভরানো যাচ্ছিলনা।
মানুষকে মুগ্ধ করা খুব কঠিন.!.!.!.!.
এ্যালবামের গান গুলো বেপক জনপ্রিয়তা পেলেও কোথায় যেন একটা অপূর্ণতা রয়ে গেল। এক সময় বালাম ভাই ও চলে গেলেন...
মানুষ আবারও হতাশ এবং আবারও বলতে শুরু করলো ওয়ারফেজের ইতিহাস এখানেই শেষ।

মানুষ যেখানে ইতিহাস শেষ ভেবেছিল ইতিহাস নতুন করে সেখান থেকেই শুরু হল।
২০০৭ সালে মিজান নামের ভয়ানক সুন্দর ভোকাল আবারও যোগ দিল ওয়ারফেজে, তখনো তার প্রতিভা সম্পর্কে সবার হয়তো তেমন একটা ধারণা জন্ম নিয়নে।
তাই শুরুতে কথা শুনতে হয়েছে।

একক ভাবে মিজান ভাইকে ভোকাল রেখে স্টুডিও এ্যালবাম আসার পর সবাই চুপসে গেল, ২০০৯ সালে পথচলা এ্যালবামে ওয়ারফেজের পুরোনো কিছু গান নতুন ভাবে তৈরী করা হল।

পুরোনো গান গুলো যেন নতুন করে জন্ম নিল, ছড়িয়ে পড়লো মানুষের মুখে মুখে।
২০১৩ তে এসে ওয়ারফেজ রিলিজ করলো "সত্য" এ্যালবাম।
যে এ্যালবাম ইতিহাসের সেরা এ্যালবাম গুলোর একটি বললে হয়তো ভুল কিছু বলা হবেনা। ততদিনে হেটার্সদের মুখ বন্দ করে দিয়েছেন মিজান।
আগামী দুইশো বছর পাঁচশো বছর পরও যদি মিউজিকের ইতিহাস নিয়ে কেউ লিখতে বসে তাহলে সঞ্জয় নামটা যেমন বাদ দেয়া যাবেনা, তেমনি মিজান নামটাও বাদ দেয়া যাবেনা।
দুইজনই নিজেদের আলোয় আলোকিত।
একদিন মিজান ভাইও চলে গেলেনন।
ভক্তরা আবার হতাশ হয়ে পরলো!!!!!
নতুন ভোকাল নেয়া হল পলাশ ভাইকে।
কিন্তু ভক্তরা এই নামটা সহ্য করতেই পারছেন না।
আবার বলাবলি শুরু হল ওয়ারফেজের ইতিহাস শেষ, মিজান ছাড়া ওয়ারফেজ ওয়ারফেজ না।

তাদের একটাই কথা পলাশ খেলা পারেনা, অথচ ডি-রকস্টারে পলাশ ভাই সেরা ভোকাল ছিল। খেলা তো এখনো দেখানোর সুযোগই পেলনা বেচারা। আগে একটা স্টুডিও এ্যালবাম আসতে দিন, তারপর দেখা যাবে।
আমি নিশ্চিত হেটার্সরা আবারও চুপ মেরে বসে থাকবে। কারন ওয়ারফেজের জন্ম ইতিহাস তৈরীর জন্যই হয়েছে।
আসল খেলা তো খেলে টিপু ভাই, কমল ভাই মিলে।
এতো কথা বলার কারন একটাই।
আজ যারা তুহিন ভাই শিরোনামহীন থেকে চলে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পরেছেন এবং ভাবছেন শিরোনামহীনের ইতিহাস শেষ।
তাদের ওয়ারফেজের ইতিহাসটা জানা উচিৎ...........

যারা তুহিন ভাইয়ের প্রতি ভালবাসা দেখাতে গিয়ে একজন উঠতি মিউজিসিয়ানকে গালাগালি দিচ্ছেন, অপমান করছে যার নাম "ইশতিয়াক"। এই কাজটা আপনারা কেনো করছেন.?.?.?? দেশে বিদেশে অনেক ব্যান্ড আছে যাদের মেম্বার/ভোকালিস্ট চেঞ্জ হইছে। আবার এমনও ব্যান্ড আছে যার ভোকাল চলে গেছেন, নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হওয়ার পর, আবার ফিরেও এসেছেন। এমন ঘটনাতো সচরাচরই ঘটে যে, ব্যান্ডের ভোকালের সমস্যা কোনো গেস্ট ভোকাল নিয়ে কাজ করছেন আবার ভোকাল ঠিক হলে সব ঠিক।

আপনারা অযথা নিরপরাধ ইশতিয়াক ভাইকে নিয়ে বাজে কথা বলাবলি করছেন।
তাদের বলতে চাই ইশতিয়াক ভাই তরুণ
মিউজিসিয়ানদের মধ্যে সেরাদের একজন।
একদিন তুহিন ভাইও নতুন ছিল, এই জায়গায় আসতে সময় লেগেছে। তারও সময় লাগবে।

তুহিন ভাইয়ের প্রতি ভালবাসা দেখাবেন দেখান বাধা নেই কিন্তু ইশতিয়াক নিয়ে বাজে কথা বলার আগে ভেবে বলুন। তাছাড়া ইশতিয়াক ভাইকে গেষ্ট ভোকাল হিসেবে ডাকা হয়েছিল, এখনো অফিসিয়ালি সিলেক্ট করা হয়নি শিরোনামহীনের পরবর্তী ভোকাল কে হবেন।

তাই ইশতিয়াক ভাইয়ের গুষ্টি উদ্ধার করা বাদ দিন।
আর তুহিন ভাই ছাড়া শিরোনামহীন খেলতে পারবেনা এমন ভাবার আগে ওয়ারফেজের ইতিহাসে চোখ বুলিয়ে নিন।
মনে রাখবেন আপনি যেখানে ইতিহাস শেষ ভাববেন ইতিহাস সেখান থেকে শুরু হয়।
সঞ্জয় ভাইয়ের মতো ভোকালের জায়গায় যখন কেউ এসে মানিয়ে নিতে পেরেছে, তুহিন ভাইয়ের জায়গাও পারবে, পারবেই.......

তরুণদের উপর আস্তা রাখুন, নিঃসন্দেহে এ যুগের তরুণরা ট্যালেন্টেড.!.!.!.!.!.!.!.!.
এমন কিছু ভক্ত আছেন যারা দাবী করছে তারা শুধু তুহিন ভাইয়ের ভক্ত। তুহিন ভাইয়ের জন্য শিরোনামহীন শুনছে এতদিন। তুহিন হীন শিরোনামহীন তারা শুনবেনা। এটা আপনাদের ইচ্ছা, শিরোনামহীন যদি আপনার মন মত গান (মিউজিক) করতে পারে তাহলে শুনবেন, আর যদি না করতে পারে তবে শুনবেননা এইটা স্বাভাবিক। আর যদি আপনি শিরোনামহীনে তুহিন ভাইকে শুধু শুনতে চান সেটাতো সম্ভব না। কারন শিরোনামহীনে শুধু তুহিন ভাইকে শোনার সুযোগ নেই। শিরোনামহীন একটা ব্যান্ড এখানে তুহিন ভাই খালি গলায় গান করেন না। এখানে গানে লিরিক্স ও আছে এবং সুন্দর টিউন আর কম্পোজিশন আছে।
আমি আবার বলছি=>> আমরা শিরোনামহীন কে ভালবাসি, শিরোনামহীন ব্যান্ডের গান কে ভালবাসি, কোনো ব্যক্তি কে নয়।

লিখেছেন: জয়ন্ত কমল


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাউল সাধক চান মিয়া এবং আমার কিছু উপলব্ধি

"রজনী হইসনা অবসান  আজ নিশিতে আসতে পারেবন্ধু কালাচাঁন।। কত নিশি পোহাইলোমনের আশা মনে রইলো রে কেন বন্ধু আসিলোনা জুড়ায়না পরান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। বাসর সাজাই আসার আশেআসবে বন্ধু নিশি শেষে দারূন পিরিতের বিষে ধরিল উজান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। মেঘে ঢাকা আঁধার রাতে কেমনে থাকি একা ঘরে সাধক চাঁনমিয়া কয় কানতে কানতে হইলাম পেরেশান আজ নিশিতে আসতে বন্দু কালাচাঁন।"    গভীর নিশিতে ধ্যান মগ্ন হয়ে কালাচাঁনের অপেক্ষা করছেন সাধক।  সাধক চান মিয়ার শিষ্য বাউল সিরাজউদ্দিনের মতে এটি একটি রাই বিচ্ছেদ। কৃষ্ণের অপেক্ষায় রাধা নিশি বা রাতকে অনুরোধ করছেন 'রাত' যেন না পোহায়  কারণ তার কালা চান যে কোন সময় আসতে পারে। শব্দগুচ্ছ গুলো থেকে সহজেই উপলব্ধি হয় সাধক নিজ দেহকে রাধা আর আত্মাকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করেছেন। দেহ আত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সাধকের সাধনা।        বাউল সাধক চান মিয়া উপরোক্ত গানটি রচনা করেছেন। নেত্রকোনা জেলার খাটপুরা গ্রামে ১৩২৫ বঙ্গাব্দে সাধক চান মিয়ার জন্ম। পুরো নাম চান্দেজ্জামান আকন্দ হলেও বা...

বাউল, বাউলতত্ব এবং কিছু কথা

একজন ভদ্র বন্ধু বরের সাথে বাউল সম্প্রদায় নিয়ে বেশ তর্ক হলো রাতে। তর্কের সূত্রপাত ছিল বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী। ভাবলাম "বাউলতত্ত্ব"র আলোকে বাউলরা ভাববাদী নাকি বস্তুবাদী তা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা আবশ্যম্ভাবী। কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব লিখে নিজের মনোভাব বোঝানোর চেষ্টা করব।  শুরুতেই শক্তিনাথ ঝাঁ এর বস্তুবাদী বাউল বই থেকে কিছু কথা লিখতে চাই; বাস্তব জগত ও জীবনকে এরা কোন আনুমানিক যুক্তি বা আলৌকিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। জৈব রাসায়নিক ব্যাখায় এরা নারীর রজঃ এবং পুরুষের বিজে জীবন ও জগত সৃষ্টিকে ব্যাখা করে এবং চার ভূতকে প্রাকৃতিক সৃষ্টি মনে করে। এভাবে মানুষে, প্রকৃতিতে তৈরি করে প্রাণ, প্রাণী। অনুমান ভিত্তিক স্বর্গ, নরক, পরলোক, পুনর্জন্মাদি প্রত্যক্ষ প্রমাণাভাবে বাউল আগ্রাহ্য করে। মানুষ ব্যাতিরিক্ত ঈশ্বরও এরা মানে না। সৃষ্টির নিয়মকে জেনে যিনি নিজেকে পরিচালনা করতে শিখেছেন- তিনিই সাঁই। সুস্থ নিরোগ দীর্ঘজীবন এবং আনন্দকে অনুভব করার বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।।  বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী এর অনেক সূক্ষ বিশ্লেষণ শক্তিনাথের বস্তুবাদী বাউল বইটির মধ্যে আলকপাত করা হয়েছে। সাধারণ সমাজে এ ধা...

ভাইবে রাধারমণ

তখন কলেজের ছাত্র। বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় রেজা স্যারের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। কলেজের প্রথম দিনই স্যারকে খুব পছন্দ। তারপর স্যারের সাথে গল্প, সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। রীতিমত ফিজিক্স, বায়োলোজি ক্লাস ফাঁকি দিলেও বাংলা ক্লাস কখনই ফাঁকি দিতাম না। খুব উপভোগ করতাম স্যারের ক্লাস। হোস্টেল সুপার হিসেবে স্যার ( ওহী আলম রেজা) আমাদের সাথেই থাকতেন। আমরা আসার প্রায় নয় মাস পর স্যার এলেন সুপার হিসেবে। প্রতিদিন রাতে খাবার পরেই স্যারের রুমে গিয়ে আড্ডা হত, গানের আসর হত। স্যারের পিসিতে প্রায়ই গান শুনতাম আমরা। একদিন হঠাৎ করেই একটি গান স্যার প্লে করলেন 'আমার বন্ধু দয়াময় তোমারে দেখিবার মনে লয়। তোমারে না দেখলে রাধার জীবন কেমনে রয় বন্ধুরে।। কদম ডালে বইসারে বন্ধু ভাঙ্গ কদম্বের আগা। শিশুকালে প্রেম শিখাইয়া যৌবনকালে দাগা রে।। তমাল ডালে বইসারে বন্ধু বাজাও রঙের বাশি। সুর শুনিয়া রাধার মন হইলো যে উদাসি রে।। ভাইবে রাধা রমন বলে মনেতে ভাবিয়া। নিভা ছিল মনের আগুন কে দিলাই জ্বালাইয়া রে।' গানের কথাগুলো বেশ ভালো লেগে গেলো। পুর গানটি শুনে বুঝলাম গানটি সাধক রাধারম...