সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভালো থাকুক পৃথিবী

Let's Celebrate Earth Day! এই মেসেজটা পেয়ে হঠাত করেই ভাবনায় পড়ে গেসিলাম। মনে পড়ে গেলো কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এর ছাড়পত্র কবিতার দুটো লাইন , ‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ়-অঙ্গীকার’। সেই বিশ্ব বা পৃথিবী দিবস আজ। পৃথিবীতেই পালন করা হচ্ছে পৃথিবী দিবস। স্কুল জীবনে বাংলা ২য় পত্রের পৃথিবীর সমার্থক শব্দ এলেই লিখে দিতাম বিশ্ব, ধরিত্রী, দুনিয়া ইত্যাদি একই অর্থের বিভিন্ন শব্দ আর খট করে লিখে নিতাম, লুফে নিতাম পাঁচ মার্ক। আসলে এই পৃথিবী থেকে কত কিছুই না নিয়েছি, পেয়েছি। পৃথিবীর কোলে বসেই দেখেছি নীল আকাশ, যেদিকে তাকালে প্রিয় নিল রঙের প্রেমে পড়ি বারবার। পৃথিবীর কোলে বসেই সবুজ বিস্তৃত ঘাস, বা লাল টকটকে ডুবন্ত সূর্যকে দেখে আঁচ করতে পারি আমার পরিচয় লাল সবুজকে। পৃথিবীর কত রঙ , কত মঞ্চ, কত চঞ্চল, কত জঞ্জাল, কত কান্ড, কত কাষ্ঠ , কতই না তার বাহার। এই পৃথিবীর কোলে বসে খেয়েছি আহার। 

দিবস পালন করি আমরা ত বহু। কোন দিবসে কেঁদে দুঃখে বুক ভাসাই, কোন দিবসে দ্রোহ ভালোবাসায় জেগে উঠি, কোন দিবসে আবার প্রিয় জনের মুখ খুঁজি। আজ পৃথিবী দিবস। ভাবছি পৃথিবীর পৃথিবী নিয়ে। ভালো আছেত পৃথিবী! কেমন যাচ্ছে তাঁর দিনকাল, দিবস রজনী! এই কথাই ভাবছি ভাবাচ্ছে। পৃথিবী মায়ের সন্তানরা খেয়ে পরে বেঁচে আছে ত! মনে প্রাণে চাই তাঁরা ভালো থাকুক, আমি ভালো থাকি, সবাই ভালো থাকি। 

এ ত গেলো আমার মনের কথা। একটু ইতিহাস বলি, মূলত পৃথিবীকে পৃথিবীকে মানুষের বসবাসযোগ্য রাখতে প্রতিবছর ২২ এপ্রিল এই দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। সেজন্যি বলাছিলাম উপরে পৃথিবী মায়ের সন্তানেরা ভালো আছে ত! বিশ্বকে দূষণমুক্ত ও সুন্দরভাবে  গড়ে তুলতে ১৯৬৯ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে ইউনেস্কোর সভায় দিনটির সূচনা করেন শান্তিদূত জন ম্যাককনেল। তখন ২১ মার্চ দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ১৯৭০ সালে মার্কিন সিনেটর গেলর্ড নেলসন ও ডেনিস হেইসের উদ্যোগে প্রতি বছর ২২ এপ্রিল দিনটি পালন করা হয়। বিশ্বের ১৯২টি দেশে এই দিবসটি পালিত হয়।   

কবি সুকান্তের সেই কথা থেকে বলছি, আমাদের পৃথিবীকে আমরা কতখানি ভালো রাখছি! রাখতে পারছি ত ? পৃথিবীতে একটি শিশুর আগমন ঘটার পর বেঁচে থাকার জন্য তার প্রয়োজন হয় অক্সিজেন। শুধু মানুষ নয় বরং প্রতিটি প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্যই অক্সিজেন চাই। কিন্তু শিশু কোথায় পাবে নির্মল অক্সিজেন। আমাদের কর্মকান্ডের ফলে সীসা ভরা অক্সিজেন শিশুকে পৃথিবীতে স্বাগতম জানাচ্ছে। পর্যাপ্ত বৃক্ষ নাই। সব উজাড় করে ফেলেছি। যা বাকী আছে তাও ধ্বংস করার দ্বারপ্রান্তে। যে গাছ অবশিষ্ট আছে তা শিশুর জন্য অতিপ্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারছে না।

মানুষের জীবনতুল্য পানি থেকে শুরু করে এমন কোন খাদ্য নেই যা নির্ভেজাল। ভেজালের দুনিয়ায় নির্ভেজাল কিছুই নেই। মাছ, মাংস, সব্জি, ফলমূলসহ সব কিছুই দেখতে তাজা অথচ বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে ওগুলো বিষ করে রাখা হয়েছে। প্রাকৃতিক স্বাদ নেই। 

সর্বশেষে এটা কামনা ,আশা- আলো বাতাস পানিতে ভরে থাকুক পৃথিবী। রঙ্গে ভালো থাকুক পৃথিবীর মঞ্চ। ভালো থাকুন পৃথিবী মায়ের সকল সন্তানেরা, ভালো থাকুক পৃথিবী। 

লিখেছেন- মারূফ অমিত 











মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাউল সাধক চান মিয়া এবং আমার কিছু উপলব্ধি

"রজনী হইসনা অবসান  আজ নিশিতে আসতে পারেবন্ধু কালাচাঁন।। কত নিশি পোহাইলোমনের আশা মনে রইলো রে কেন বন্ধু আসিলোনা জুড়ায়না পরান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। বাসর সাজাই আসার আশেআসবে বন্ধু নিশি শেষে দারূন পিরিতের বিষে ধরিল উজান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। মেঘে ঢাকা আঁধার রাতে কেমনে থাকি একা ঘরে সাধক চাঁনমিয়া কয় কানতে কানতে হইলাম পেরেশান আজ নিশিতে আসতে বন্দু কালাচাঁন।"    গভীর নিশিতে ধ্যান মগ্ন হয়ে কালাচাঁনের অপেক্ষা করছেন সাধক।  সাধক চান মিয়ার শিষ্য বাউল সিরাজউদ্দিনের মতে এটি একটি রাই বিচ্ছেদ। কৃষ্ণের অপেক্ষায় রাধা নিশি বা রাতকে অনুরোধ করছেন 'রাত' যেন না পোহায়  কারণ তার কালা চান যে কোন সময় আসতে পারে। শব্দগুচ্ছ গুলো থেকে সহজেই উপলব্ধি হয় সাধক নিজ দেহকে রাধা আর আত্মাকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করেছেন। দেহ আত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সাধকের সাধনা।        বাউল সাধক চান মিয়া উপরোক্ত গানটি রচনা করেছেন। নেত্রকোনা জেলার খাটপুরা গ্রামে ১৩২৫ বঙ্গাব্দে সাধক চান মিয়ার জন্ম। পুরো নাম চান্দেজ্জামান আকন্দ হলেও বা...

বাউল, বাউলতত্ব এবং কিছু কথা

একজন ভদ্র বন্ধু বরের সাথে বাউল সম্প্রদায় নিয়ে বেশ তর্ক হলো রাতে। তর্কের সূত্রপাত ছিল বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী। ভাবলাম "বাউলতত্ত্ব"র আলোকে বাউলরা ভাববাদী নাকি বস্তুবাদী তা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা আবশ্যম্ভাবী। কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব লিখে নিজের মনোভাব বোঝানোর চেষ্টা করব।  শুরুতেই শক্তিনাথ ঝাঁ এর বস্তুবাদী বাউল বই থেকে কিছু কথা লিখতে চাই; বাস্তব জগত ও জীবনকে এরা কোন আনুমানিক যুক্তি বা আলৌকিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। জৈব রাসায়নিক ব্যাখায় এরা নারীর রজঃ এবং পুরুষের বিজে জীবন ও জগত সৃষ্টিকে ব্যাখা করে এবং চার ভূতকে প্রাকৃতিক সৃষ্টি মনে করে। এভাবে মানুষে, প্রকৃতিতে তৈরি করে প্রাণ, প্রাণী। অনুমান ভিত্তিক স্বর্গ, নরক, পরলোক, পুনর্জন্মাদি প্রত্যক্ষ প্রমাণাভাবে বাউল আগ্রাহ্য করে। মানুষ ব্যাতিরিক্ত ঈশ্বরও এরা মানে না। সৃষ্টির নিয়মকে জেনে যিনি নিজেকে পরিচালনা করতে শিখেছেন- তিনিই সাঁই। সুস্থ নিরোগ দীর্ঘজীবন এবং আনন্দকে অনুভব করার বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।।  বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী এর অনেক সূক্ষ বিশ্লেষণ শক্তিনাথের বস্তুবাদী বাউল বইটির মধ্যে আলকপাত করা হয়েছে। সাধারণ সমাজে এ ধা...

ভাইবে রাধারমণ

তখন কলেজের ছাত্র। বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় রেজা স্যারের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। কলেজের প্রথম দিনই স্যারকে খুব পছন্দ। তারপর স্যারের সাথে গল্প, সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। রীতিমত ফিজিক্স, বায়োলোজি ক্লাস ফাঁকি দিলেও বাংলা ক্লাস কখনই ফাঁকি দিতাম না। খুব উপভোগ করতাম স্যারের ক্লাস। হোস্টেল সুপার হিসেবে স্যার ( ওহী আলম রেজা) আমাদের সাথেই থাকতেন। আমরা আসার প্রায় নয় মাস পর স্যার এলেন সুপার হিসেবে। প্রতিদিন রাতে খাবার পরেই স্যারের রুমে গিয়ে আড্ডা হত, গানের আসর হত। স্যারের পিসিতে প্রায়ই গান শুনতাম আমরা। একদিন হঠাৎ করেই একটি গান স্যার প্লে করলেন 'আমার বন্ধু দয়াময় তোমারে দেখিবার মনে লয়। তোমারে না দেখলে রাধার জীবন কেমনে রয় বন্ধুরে।। কদম ডালে বইসারে বন্ধু ভাঙ্গ কদম্বের আগা। শিশুকালে প্রেম শিখাইয়া যৌবনকালে দাগা রে।। তমাল ডালে বইসারে বন্ধু বাজাও রঙের বাশি। সুর শুনিয়া রাধার মন হইলো যে উদাসি রে।। ভাইবে রাধা রমন বলে মনেতে ভাবিয়া। নিভা ছিল মনের আগুন কে দিলাই জ্বালাইয়া রে।' গানের কথাগুলো বেশ ভালো লেগে গেলো। পুর গানটি শুনে বুঝলাম গানটি সাধক রাধারম...