সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার দৃষ্টিতে ফটোগ্রাফি - ১

বাইরে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছেন ? গাছের ডালের ফাঁকে শুভ্র মেঘের আড়ালে নীলাকাশ দেখা যাচ্ছে। হাতের সেল ফোন দিয়ে তুলে নিন একটি স্নেপ। এইতো হয়ে গেলো সুন্দর একটি ছবি। ফটোগ্রাফির শাস্ত্রীয় মতে এটি হতে পারে ন্যাচারাল বা এবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফি। তবে আপনার চিন্তা করার কারণ নেই এটি কোন ধরনের ফটোগ্রাফি হচ্ছে। যেটাই ভালো লাগে সেটার ছবি তুলতে থাকুন। এটাই প্রথম কাজ।


অনেকেই মনে করেন ফটোগ্রাফি করতে হলে বা শিখতে হলে অনেক দামী দামী ক্যামেরার প্রয়োজন। আমার মনে হয় এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ফটোগ্রাফি হচ্ছে একটি শিল্প । আপনি যেভাবে উপস্থাপন করবেন সেভাবেই সেটা শিল্পের রূপ নেবে। আর শিল্প এমন একটি জিনিস কয়েকটি সবুজ ঘাস যদি আপনি পিচ ঢালা রাস্তায় রেখে কোন একটি সেইপ তৈরি করতে পারেন সেটি একটি সুন্দর শিল্পে পরিনিত হবে।


এইত বারান্দায় পাতা টেবিল চেয়ারে বসে আকাশ দেখছি। বারান্দার ওপারে ঝাউ গাছের সারি দিয়ে সন্ধ্যার নীল আকাশ দেখা যাচ্ছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে হালকা আকাশী ক্যানভাসে ময়ূরের পালক দিয়ে কালো রেখা একে দিয়েছি। একধরনের চমৎকার এবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফি হতে পারে ঝাউ ডালের সাথে নীল আকাশের সমাহারে। ফটোগ্রাফি সম্পূর্ণ আপনার মনস্ত্বাত্বিক ব্যাপার। কিভাবে উপস্থাপন  করবেন তা আপনি জানেন।


সোজা বাংলায় বলতে গেলে, একটা সময় অথবা একটা মোমেন্ট কে কোনো একটা মাধ্যমে আটকে ফেলা – এটাই সহজ ফটোগ্রাফি। এটাই আমার কাছে ফটোগ্রাফের সংজ্ঞা।  Photos একটি গ্রীক শব্দ – যার অর্থ হলো Light অর্থাৎ এবং Graphos যার মানে হলো Drawing মানে আঁকা। তাহলে Photography মানে দাড়াচ্ছে আলো দিয়ে আঁকা। এক কোথায় যেটা আমরা সবসময় শুনে থাকি “আলোকচিত্র”।

আজকে এতটুকুই । বিশেষ কিছু লিখব না। শুধু ফটোগ্রাফি নিয়ে নিজের মনের প্রাথমিক অবস্থা তুলে ধরলাম। হোয়াট ইজ ফটোগ্রাফি।

আমার মতে পৃথিবীতে যতগুলো শিল্প আছে, যেসব কাজে পুরো পৃথিবী লুকিয়ে আছে সেগুলোর মধ্যে আলোকচিত্র বা ফটোগ্রাফি একটি বিশাল থিম। ফটোগ্রাফি করার জন্য কয়েক হাজার ডলারের বিশাল ক্যামেরার প্রয়োজন হয় না, একটি ৫ মেগা পিক্সেলের ক্যামেরা দিয়েও হতে পারে যদি আপনার চোখের দৃষ্টিতে লেগে থাকে সুন্দর পৃথিবীর বিশাল, ব্যপ্তিময় সৌন্দর্য।


লিখেছেন- মারূফ অমিত, সাংবাদিক, আলোকচিত্রী,  

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাউল সাধক চান মিয়া এবং আমার কিছু উপলব্ধি

"রজনী হইসনা অবসান  আজ নিশিতে আসতে পারেবন্ধু কালাচাঁন।। কত নিশি পোহাইলোমনের আশা মনে রইলো রে কেন বন্ধু আসিলোনা জুড়ায়না পরান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। বাসর সাজাই আসার আশেআসবে বন্ধু নিশি শেষে দারূন পিরিতের বিষে ধরিল উজান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। মেঘে ঢাকা আঁধার রাতে কেমনে থাকি একা ঘরে সাধক চাঁনমিয়া কয় কানতে কানতে হইলাম পেরেশান আজ নিশিতে আসতে বন্দু কালাচাঁন।"    গভীর নিশিতে ধ্যান মগ্ন হয়ে কালাচাঁনের অপেক্ষা করছেন সাধক।  সাধক চান মিয়ার শিষ্য বাউল সিরাজউদ্দিনের মতে এটি একটি রাই বিচ্ছেদ। কৃষ্ণের অপেক্ষায় রাধা নিশি বা রাতকে অনুরোধ করছেন 'রাত' যেন না পোহায়  কারণ তার কালা চান যে কোন সময় আসতে পারে। শব্দগুচ্ছ গুলো থেকে সহজেই উপলব্ধি হয় সাধক নিজ দেহকে রাধা আর আত্মাকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করেছেন। দেহ আত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সাধকের সাধনা।        বাউল সাধক চান মিয়া উপরোক্ত গানটি রচনা করেছেন। নেত্রকোনা জেলার খাটপুরা গ্রামে ১৩২৫ বঙ্গাব্দে সাধক চান মিয়ার জন্ম। পুরো নাম চান্দেজ্জামান আকন্দ হলেও বা...

বাউল, বাউলতত্ব এবং কিছু কথা

একজন ভদ্র বন্ধু বরের সাথে বাউল সম্প্রদায় নিয়ে বেশ তর্ক হলো রাতে। তর্কের সূত্রপাত ছিল বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী। ভাবলাম "বাউলতত্ত্ব"র আলোকে বাউলরা ভাববাদী নাকি বস্তুবাদী তা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা আবশ্যম্ভাবী। কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব লিখে নিজের মনোভাব বোঝানোর চেষ্টা করব।  শুরুতেই শক্তিনাথ ঝাঁ এর বস্তুবাদী বাউল বই থেকে কিছু কথা লিখতে চাই; বাস্তব জগত ও জীবনকে এরা কোন আনুমানিক যুক্তি বা আলৌকিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। জৈব রাসায়নিক ব্যাখায় এরা নারীর রজঃ এবং পুরুষের বিজে জীবন ও জগত সৃষ্টিকে ব্যাখা করে এবং চার ভূতকে প্রাকৃতিক সৃষ্টি মনে করে। এভাবে মানুষে, প্রকৃতিতে তৈরি করে প্রাণ, প্রাণী। অনুমান ভিত্তিক স্বর্গ, নরক, পরলোক, পুনর্জন্মাদি প্রত্যক্ষ প্রমাণাভাবে বাউল আগ্রাহ্য করে। মানুষ ব্যাতিরিক্ত ঈশ্বরও এরা মানে না। সৃষ্টির নিয়মকে জেনে যিনি নিজেকে পরিচালনা করতে শিখেছেন- তিনিই সাঁই। সুস্থ নিরোগ দীর্ঘজীবন এবং আনন্দকে অনুভব করার বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।।  বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী এর অনেক সূক্ষ বিশ্লেষণ শক্তিনাথের বস্তুবাদী বাউল বইটির মধ্যে আলকপাত করা হয়েছে। সাধারণ সমাজে এ ধা...

ভাইবে রাধারমণ

তখন কলেজের ছাত্র। বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় রেজা স্যারের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। কলেজের প্রথম দিনই স্যারকে খুব পছন্দ। তারপর স্যারের সাথে গল্প, সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। রীতিমত ফিজিক্স, বায়োলোজি ক্লাস ফাঁকি দিলেও বাংলা ক্লাস কখনই ফাঁকি দিতাম না। খুব উপভোগ করতাম স্যারের ক্লাস। হোস্টেল সুপার হিসেবে স্যার ( ওহী আলম রেজা) আমাদের সাথেই থাকতেন। আমরা আসার প্রায় নয় মাস পর স্যার এলেন সুপার হিসেবে। প্রতিদিন রাতে খাবার পরেই স্যারের রুমে গিয়ে আড্ডা হত, গানের আসর হত। স্যারের পিসিতে প্রায়ই গান শুনতাম আমরা। একদিন হঠাৎ করেই একটি গান স্যার প্লে করলেন 'আমার বন্ধু দয়াময় তোমারে দেখিবার মনে লয়। তোমারে না দেখলে রাধার জীবন কেমনে রয় বন্ধুরে।। কদম ডালে বইসারে বন্ধু ভাঙ্গ কদম্বের আগা। শিশুকালে প্রেম শিখাইয়া যৌবনকালে দাগা রে।। তমাল ডালে বইসারে বন্ধু বাজাও রঙের বাশি। সুর শুনিয়া রাধার মন হইলো যে উদাসি রে।। ভাইবে রাধা রমন বলে মনেতে ভাবিয়া। নিভা ছিল মনের আগুন কে দিলাই জ্বালাইয়া রে।' গানের কথাগুলো বেশ ভালো লেগে গেলো। পুর গানটি শুনে বুঝলাম গানটি সাধক রাধারম...