সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আগস্ট, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নানকার বিদ্রোহ: বিদ্রোহীদের লাল সালাম

  সিলেট অঞ্চলের একটি কৃষক-আন্দোলন, যা ১৮ আগস্ট ১৯৪৯ সালে সংগঠিত হয়। জমিদারের ভূমিদাসদের একটি প্রথাকে "নানকার প্রথা" বলা হতো। বিংশ শতাব্দীর ২০-এর দশকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ১৯৫০ সালে জমিদার প্রথা বিলুপ্ত করার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। 'নান' ফার্সি শব্দ, এর অর্থ রুটি এবং 'কার' অর্থ যোগান বা কাজ করা; অর্থাৎ 'নানকার' শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয় সেসব কর্মীদের যারা খাবারের বিনিময়ে কায়িক শ্রম দান করে। কেবল খাবারের বিনিময়ে যে জমির ভোগস্বত্ব প্রজাদেরকে দেওয়া হতো সে জমিকেই নানকার জমি বলা হতো। এই নানকার প্রজারা ছিলো ভূমির মালিকের হুকুমদাস; প্রজাই নয় তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও বংশানুক্রমে ভূমি মালিকের দাস হতো। সাধারণত: নিম্নবর্ণের হিন্দুরাই; যেমন: কিরান, নম-শূদ্র, মালি, ঢুলি, নাপিত, পাটনি প্রভৃতি শ্রেণির লোকেরাই নানকার শ্রেণির প্রজা ছিল। নানকার একটি বর্বর শ্রম শোষণের প্রথা, অনেকটা মধ্যযুগীয় দাস প্রথার সঙ্গে তুলনীয়। প্রধানত সিলেটের বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ অঞ্চলে এই সামন্ত প্রথাটি প্রচলিত ছিল। সামন্ত ভূ-মালিকদের সিলেট অঞ্চলে মিরাশদার এবং বড় মিরাশদারকে জমিদার বলা হতো। জম...

একজন বীর প্রতিকের শেষ ইচ্ছা

একজন বীরপ্রতীকের শেষ ইচ্ছে আজও পুর্ন হলো না, প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বরাবর আবেদন। সিলেটের ৪ জন বীর প্রতিকের ১ জন . এম সি কলেজের সাবেক ভি.পি , ৭১ এর রণাঙ্গনের সম্মুখ সমরের যুদ্ধা - বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বীর প্রতিক , বাড়ি - আগ্নপাড়া , দেওকলস , বিশ্বনাথ সিলেট । এই দেশপ্রেমিক মহান মুক্তিযোদ্ধার নিজ গ্রামের মুল সড়ক পাকা করণের জন্য বার বার ধর্ণা দিতেহচ্ছে। অথচ দেশে কত বড় বড় প্রকল্প হয় , কিন্তু আফসোস উনার গ্রামের একটি সড়কের ব্যাপারে নিরব বিশ্বনাথ উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তারা ! কী কারনে আজ পর্যন্ত উন্নয়ন বঞ্চিত এ এলাকা ——- বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের আগ্নপাড়া রাস্তাটি গুদামঘাট-আগ্নপাড়া-মজলিসপুর পর্যন্ত আড়াই কিঃ মিঃ রাস্তা। উক্ত রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক যাতায়াত করেন। রাস্তাটি দ্রুত পাঁকা করনের জন্য এলাকাবাসী সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান। জানাযায় আগ্ন পাড়া গ্রামে রয়েছে ৩৬০ আউলিয়ার সফর সঙ্গী ঐসৎ শাহের মাজার ও আহমেদ পীরের মাজার রয়েছে। এই গ্রামে জন্মগ্রহন করেন সিলেটের ৪ জন বীর প্রতিকের একজন বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম ও প্রবা...

'চাষার দুক্ষু' ও পুঁজিবাদী ব্যবস্থা

ক্ষুধার জ্বালা কত বড় জ্বালা, সেটা তো মানুষ জানে। অামাদের সে জ্বালা দূর করে কে? - অামাদের কৃষক। কাজেই কৃষকদের অামাদের মাথায় তুলে রাখা উচিৎ বলে অামি মনে করি।  এই কথাগুলো ২০১৬ সালে কৃষকদের এক সমাবেশে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এর প্রায় ১০০ বছর অাগে নারী জাগরনের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন- ক্ষেতে ক্ষেতে পুইড়া মরি রে ভাই পাছায় জোটে না ত্যানা বৌ এর পৈছা বিকায় তবু ছেইলা পায় না দানা।  তিনি 'চাষার দুক্ষু' প্রবন্ধে ওই সময়ের কৃষকের দুর্দশার চিত্র ও মুক্তির পথ বর্ননা করেছেন।  কুষকের অবস্থা ১০০ বছর অাগে যা ছিল অাজো তাই অাছে। কৃষক দেশকে খাদ্যে স্বনির্ভর করে,  কিন্তু তাঁর দারিদ্রতা কখনো দূর হয় না। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়ে, মাথাপিছু অায় বাড়ে, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়ে কিন্তু কৃষকের কোনো উন্নতি হয় না।  এর জন্য দায়ী পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। কৃষককে সব সময় বেশি দামে কিনতে হয় এবং কম দামে বেঁচতে হয়।  'চাষার দুক্ষু' প্রবন্ধটি তৎকালীন দারিদ্রপীড়িত কৃষকদের বঞ্চনার  মর্মন্তুদ দলিল। ভারতবর্ষের সভ্যতা ও অগ্রগতির ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি দেখিয়েছেন, সেখানে কৃষকদের অব...

৭০ দশকের চলচ্চিত্রে ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা ( ভালোবাসার ফেঞ্চুগঞ্জ, পর্ব ৪)

  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি চলচ্চিত্রের ভিডিও ফুটেজের ছবিতে ফেঞ্চুগঞ্জ নাম দেখে চোখ লেপ্টে গেলো অখানেই। বেশ অবাক হলাম, কি ব্যাপার ফেঞ্চুগঞ্জ এর নাম এখানে কেন। গত দুদিন থেকে এটা নিয়ে বেশ ঘাঁটাঘাঁটি করে ফলাফল পেয়ে গেলাম। বেশ কিছু ইতিহাস খুঁজে বের করলাম ৭০ এর দশকে সাড়া জাগানো বাংলা ছায়াছবি 'বিনিময়' চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছিল আমাদের ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানায়। পরবর্তীতে চলচ্চিত্রটি দেখে পুরো কনফার্ম হলাম এই ছায়াছবির প্রায় আশিভাগ শুটিং হয়েছে আমার জন্মস্থান, প্রিয় ফেঞ্চুগঞ্জ এ।  চলচ্চিত্রটি দেখে জানলাম, ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা, মনিপুর চা বাগান, উত্তরভাগ চা বাগান, চানভাগ চা বাগান,  ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার অফিসার্স ক্লাব, ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার প্রবেশ পথ পুরান বাজার রেল লাইন, ছায়ানীড় সিনেমা হল,গেস্ট হাউজ এবং ফেঞ্চুগঞ্জ সারখানার ভেতরে অনেক শুট নেওয়া হয়েছে ছবিতে।  ছায়াছবির বায়োডাটা ঘেটে জানা যায়, ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার অফিসার্স ক্লাবের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেই সেখানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানায় কর্মরত আমাদের অনেক শ্রমিক বাবা চাচারা তৎকালীন সময়ে ছায়াছবিটির শুটি...

বঙ্কিম চন্দ্রের 'বিড়াল' ও আজকের সমাজ ব্যবস্থা

বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়।  তিনি বাংলা উপন্যাসের প্রথম সার্থক স্রষ্টা। 'সাহিত্যসম্রাট' হিসেবে পরিচিত বঙ্কিম বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ।  যারা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে স্বীয় কীর্তি দ্বারা অমর হয়ে অাছেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় অন্যতম। বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়ের হাস্য- রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী রচনার সংকলন ' কমলাকান্তের দপ্তর'। তিন অংশে বিভক্ত গ্রন্থটিতে যে কটি প্রবন্ধ রয়েছে তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য 'বিড়াল'। একটি বিড়ালকে রুপক হিসেবে ব্যবহার করে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতিবাদ ও অধিকারকে লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়৷ সাম্যবাদবিমুখ ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষে একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় বিড়ালের মুখ দিয়ে শোষক- শোষিত, ধনী -দরিদ্র, সাধু- চোরের অধিকারের কথা শ্লেষাত্মক, যুক্তিনিষ্ট ও সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন। রচনার শুরুতে দেখা যায়, অাফিংয়ের নেশায় বুঁদ হয়ে শয়নগৃহে চৌকির উপর বসে কমলাকান্ত ওয়াটার্লু যুদ্ধ নিয়ে ভাবছিলেন। হঠাৎ বিড়ালের একটা 'মেও' শব্দে ধ্যান ভাঙ্গে। কমলাকান্ত দ...