সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2022 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি এবং কিছু আলোচনা

 আমরা সবসময়'ই বলি পুণ্যভূমি সিলেট। আসলে কতখানি পুণ্যের কাজ করি। অনেকেই হয়তো ভাবছেন নামাজ রোজা পূজা পালন ইত্যাদি। না, আমি এসব ধর্মীয় রীতি পালনের কথা বলছিনা। আমি বলছি আমরা আমাদের মাটির জন্য কতখানি ভালো এবং সুফলদায়ক কাজ করি যেটা মঙ্গলজনক। সিলেটে নদীগুলো আজ বিপন্ন। শুধু বিপন্ন নয় মহা বিপন্ন নাব্যতা নেই। আমাদের চলমান জীবনের যত ময়লা আছে, পলিথিন আছে সবই নদীতে। সুরমা নদীর তীরে আমার ঠিকানারে এই কথাটি শুনে আমরা সুরের তালে গানের মাতমে শুনে হাত তালি দেই কিন্তু নেইনা সেই নদীর খোঁজ। নদীতে নাব্যতা নেই, অবৈধ ড্রেজারে বালু তোলা ঠিকাদারদের একধরনের আফিমের নেশা বলা বলা যায়। পান চিবিয়ে মুখের লাল রস গুলো দিয়ে ক্যানভাস করে ফেলি নগরের স্কুলের দেয়াল, মার্কেটের দেয়ালে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ত নেই'ই, এর মধ্যে লোক দেখানো বা যা মনে হলো সেটা ভেবেই এখানে সেখানে খুঁড়াখুঁড়ি ।  সিলেট শহরের কালীঘাট থেকে টুকের বাজার, কালীঘাট থেকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই এলাকা পর্যন্ত সর্বত্রই আবর্জনার ভাগাড়। একইভাবে সুনামগঞ্জ শহর এলাকায় সুরমা নদীর তীর এখন ময়লার ভাগাড়, আবর্জনার স্তূপ। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সাহেববাড়ি সেলুঘাট, উত্তর আর...

সরকার এবং গনপ্রজাতন্ত্র

 ১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। কিছু মনের কথা বলছি, তাঁর আগে একটু বলে নেই, ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়। এম এ জি ওসমানীকে সরকারের প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। শপথ গ্রহণের স্থান বৈদ্যনাথতলাকে মুজিবনগর নামকরণ কর হয়। ১০ এপ্রিল, ১৯৭১, রাতে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বেতারে বক্তব্য রাখেন তাজউদ্দীন আহমদ। পরদিন আকাশবাণী থেকে আবার এই বক্তৃতা প্রচারিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠনের ভিত্তি ছিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, যা ১০ এপ্রিল ১৯৭১-এ গৃহীত হয়। এই সরকারের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়। এই সরকারকে দায়িত্ব পালন করতে হয় বিশ্ব কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক আবহকে প্রতি মুহূর্তের বিশ্নেষণ ও বিবেচনায় রেখে। সংগঠিত করতে হয় মুক্তিযুদ্ধের সব বিষয়কে। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের ...

চা বাগানের সন্ধ্যাঃ পর্ব ১

অগ্রহায়ণের শেষে মিঠা বিকেল অনেক আগেই পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। চিরোচেনা চা বাগান শান্ত, হালকা কুয়াশার হাতছানি পড়ছে এপাশ ওপাশে। দূরের পাহাড়গুলো কুয়াশার চাদরে মুড়িয়ে নিয়েছে নিজেকে। প্রায় দুই শতাব্দী আগে ভারতের আসাম উড়িষ্যা বিহার থেকে নিয়ে আসা শ্রমিকদের দিয়ে ইংরেজরা লর্ডরা এই চা বাগান গড়ে তুলে ছিলেন আমার পূর্ব পুরুষের মাটিতে। চা বাগানের কোলে বেড়ে ওঠা আমার জীবন অনেকটা চা পাতার মতই বলা যায়। কখনো সবুজ সফেদ,  কখনো বৃষ্টির অপেক্ষায় ফুল দিতে, আবার পানি জমতে দেবেনা গোঁড়ায়।  ঘুম থেকে উঠে দেখি দুপুর শেষের পথে বিকেলের শুরু। মা এখনো ফিরেননি স্কুল থেকে। কাজ রাজনীতি শেষে খানেক বিশ্রাম নেওয়া বাবা বাহিরের ঘরে কার সাথে যেনো টেলিফোনের রাজনীতির আলাপ করছেন। উঠে সোজা সাপ্টা নিয়মের ব্রাশিং শেষে গোসল করে কোনমতে খেতে খেতেই মা চলে এলেন বাসায়, স্কুল শেষ। মায়ের মুখ দর্শন দেখেই বন্ধু মুহিতকে ফোন।  তারা আসা অব্দি আমাদের সারকারখানার পুরাতন মেডিক্যালের কোণায় এপাশ ওপাশ করতেই সে এসে হাজির। তার মোটর সাইকেলের পেছনে বসে সোজা আমাদের সারকারখানা বাজারের ঐতিহ্যবাহী গার্ড ব্যারাক মসজিদের সামনের বন্ধু তুরাব ভূইয়ার দ...

নির্বাচন সামনে, সক্রিয় হচ্ছে জামায়াত শিবির?

 রগকাটা বাহিনী, পায়ের রগ কেটে দেয় এই রকম বহু ঘটনার স্বীকার বাংলাদেশের হাজারো মানুষ। একটি বর্বর নির্মম ঘটনার উদাহরণ দেই। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস। রংপুর কারমাইকেল কলেজের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেনের বর্বর হামলা চালায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীতাকারী জামায়াত ইসলামের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা। ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মোশাররফ হোসেনের হাত এবং পায়ের রগ কেটে দেয় ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসীরা। সিলেট সরকারী ছাত্রলীগ নেতা অসীম কান্তি করের কথা মনে আছে আমাদের সবার। অসীম কান্তি কর এর সাথে আমার বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে এ নিয়ে। সিলেটের বালুচরে তার বাসায় কিভাবে হামলা চালিয়ে পায়ের রগ কেটে, কুপিয়ে জখম করেছিলো স্থানীয় জামায়াত শিবিরের কর্মীরা। আর আমি ত নির্মম ঘটনার সরাসরি স্বাক্ষী আমার বাংলা বিভাগের শিক্ষক অহী আলম রেজার উপর শিবির কর্মীদের নির্মম দেশীয় অস্ত্রের হামলা। সেদিন আমি স্যারের সাথেই ছিলাম। বিকেলে ফেরার পর স্যারের উপর এমন নেক্কারজনক হামলা। সেই দিনের বীভৎস ঘটনা আমি মনে করতে চাই না, কিন্তু মনে হলে আমি শিউরে উঠ...

স্থানীয় রাজনীতি

 শিরোনামে নিবন্ধের স্থানীয় রাজনীতি বলতে বাংলাদেশের মফস্বল অঞ্চলের রাজনৈতিক ধারাকে বোঝানো হয়েছে। এটা মূলত জাতীয় রাজনীতিরই সম্প্রসারিত রূপ। বলতে গেলে তৃণমূলের রাজনৈতিক পরিস্থিতিই নিবন্ধের মূল আলোচ্য বিষয়। এর বিস্তার গ্রাম, ইউনিয়ন ও উপজেলা। সুসংগঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর থানা (যা বর্তমানে উপজেলা) পর্যায়ে শাখা, স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই ছিল। এমনকি ৭০-এর জাতীয় নির্বাচনে তখনকার সর্বাধিক জনসমর্থিত দল আওয়ামী লীগের কিছু শাখা ছিল ইউনিয়ন পর্যায়েও। তবে গ্রাম পর্যায়ে কর্মী-সমর্থক থাকলেও সেখানে কোনো দলের সাংগঠনিক কাঠামো আছে এমনটা জানা যায় না। এমনকি ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়েও অনেক রাজনৈতিক দলের কাঠামোগত অবস্থান নেই। তার জন্যে এটা ধরে নেয়া চলে না যে একটা রাজনৈতিক শূন্যতার মাঝে আমাদের গ্রাম, ইউনিয়ন বা উপজেলাগুলো আছে। আমাদের দেশের লোক বরাবর রাজনীতি সচেতন। তাদের অনেকেই জাতীয় রাজনীতির গতি-প্রকৃতির খবরাদি রাখেন। অংশীদার হয়ে যান অনেক আন্দোলন সংগ্রামের। যেমনটা হয়েছিলেন ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে। প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী সময়ে গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোয় স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন আসে বড় ধরনের। এর আগে ইউনিয়ন কাউন্সিল পরিষদ...