যে কর্মের বিনিময়ে রমনীর অর্থ প্রাপ্তি ঘটে কর্মজীবী রমনী তার সাথে সম্পর্কযুক্ত, না ভিন্নার্থে এর ব্যবহার -এটাই আমার কাছে এখনো এক বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন!! কর্মের বিনিময়ে বাস্তবিকই কী অর্থ প্রাপ্তি ঘটে ; না এই অর্থের দায় বাড়ে।
জীবনের রঙ্গমঞ্চে সবচে' বড় অভিনয় শিল্পী মহিলা; এঁরা আবার অভিনয় করেন নিজের জন্য নয়, কেবল অন্যের তুষ্টির জন্য -- এটা আরও দুঃখজনক। আর কর্মজীবী হলে অভিনয় শিল্পীর পাশাপাশি আরেক কাঠি সত্ত্বায় যোগ হয় যা হলো হীনমন্যতা।
হীনমন্যতার বিষয়টা পরিষ্কার করি। কর্মজীবী নারীরা এমন ভান করেন বাড়িতে ফিরে যেন সারাদিন বাইরে ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অন্যায়টা করার জন্যে। তাই নিজের ক্লান্ত তনুর দিকে দৃকপাত না করে ঝাঁপিয়ে পড়েন তার অনুপস্থিতিতে ঘর-গেরস্থালির যা ক্ষতি হলো তা পূরণে। পাশাপাশি ঘরের সবার মন রক্ষা করে হুড়মুড় করে যখন অফিসে ঢুকেন তখনও অপরাধীর দৃষ্টি নিয়ে সবার দিকে তাকান। অথচ এই পরিস্থিতির জন্যে মহিলাটি নিজে কিন্তু দায়ী নন্ যা তিনি ভুলে যান। এই হীনমন্যতা থেকে বেরুনো জরুরি। এখন অবশ্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতির পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়, যা যথেষ্ট নয়।
আমাদের এতদ্অঞ্চলে অবচেতন মনে এখনও কাঁটা খচখচ করে যে মহিলারা হয়তো কম বুঝেন বা কম দক্ষ ও যোগ্য। তাইতো রাষ্ট্রক্ষমতার সর্বোচ্চ নারী হওয়া সত্ত্বেও আমার বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি,
অধিকাংশ অফিসে যেকোনো কমিটির প্রধান পুরুষ। নারী প্রকৃতিগতভাবেই ক্ষমতাধর। কারণ একজন নারীর আলাদাভাবে সংসারের প্রতিটি সদস্যের মন জুগাতে হয়, প্রত্যেকের কথা আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে শুনে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয় হোক তা রান্না, খাওয়া বা পড়া।
তদুপরি বাড়ির বাইরে কর্মক্ষেত্র হলে তো কথাই নেই। সংসারের পাশাপাশি সেই ক্যালকুলেশন এবং সামাজিকতা সবকিছু একসাথে মাথায় রেখে চলতে হয়। তাই বুদ্ধিমত্তার চর্চা ও বিকাশে দশভুজাদের বিকল্প কোথায়!!
লেখকঃ হাসিনা ফেরদৌস, সহকারী অধ্যাপক ( গণিত), ২৪ তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা), সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন