সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবসঃ কাইয়ার গুদামের গণকবরের স্বীকৃতি

ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালে আজকের এই দিনে স্বাধীন হয়েছিল আমার প্রিয় ফেঞ্চুগঞ্জ।

১৯৭১ সালের ৪ মে পাক সেনারা ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় প্রবেশ করেই প্রথমে তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতা উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মরহুম আছকর আলীর বাড়িতে হানা দিয়ে তার পুত্র শহীদ আসাদুজ্জামান বাচ্চুকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এ সময় বাড়ির অন্য সদস্যদের খুঁজতে থাকে। তারা পূর্ব থেকেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। তথ্যমতে ফেঞ্চুগঞ্জের পাক সেনাদের হাতে প্রথম শহীদ আসাদুজ্জামান বাচ্চু।

পাক সেনা ফেঞ্চুগঞ্জে প্রবেশের পর প্রথমেই ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারে ‘‘কাইয়ার গুদামে’’ ক্যাম্প স্থাপন করে এবং এই ক্যাম্প ছিল পাক সেনাদের নির্যাতন এবং নিরীহ বাঙ্গালিদের হত্যাকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু। অনেক জানা অজানা নিরীহ বাঙ্গালিকে ধরে নিয়ে এই ক্যাম্পে নির্যাতন করা হতো। অনেককে হত্যা করে ভাসিয়ে দেয়া হতো কুশিয়ারা নদীতে। তাই কাইয়ার গুদামটি কালের সাক্ষী হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে আছে কাইয়ার গুদামের পাশের বিশাল শিমূল গাছটি। এই গাছের উপরে পাক সেনাদের পাহারা বসানো হতো।

যুদ্ধ চলাকালে উপজেলার মাইজগাঁও এলাকার নজরুল ইসলাম পংকীকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। যুদ্ধ শুরুর পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ে গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার কঠিন কাজে যারা নিয়োজিত ছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম আব্দুল লতিফ, আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম আরকান আলী, প্রয়াত ডাঃ রথীন্দ্র কুমার নাথ, তৎকালীন ছাত্রনেতা হবিবুল ইসলাম শাহ, ডাঃ আবুল হোসেন, শ্রমিক নেতা মরহুম ইসকন্দর আলী, মরহুম হাজী করম উল্লাহ, এম এইচ খান হুরু মিয়া, ডাঃ দেওয়ান নুরুল ইসলাম চঞ্চল, মরহুম মজাহিদ আলী জড়া মাষ্টার, মরহুম আলাউদ্দিন পীর, মরহুম আব্দুল গনি স্যার সহ অনেকেই।

মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এপ্রিল মাসের শেষের দিকে হানাদার বাহিনী ফেঞ্চুগঞ্জ থানা সদরে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ৭১ সালের ৪ মে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের প্রবীণ রাজনীতিবিদ মরহুম হাজী মো. আছকর আলীর বাড়িতে হামলা চালায় পাকসেনারা।

আছকর আলীর বড় ছেলে তৎকালীন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ও মদন মোহন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আসাদুজ্জামান বাচ্চুকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়। এ উপজেলায় ঘাতকদের নির্মম হত্যাযজ্ঞের প্রথম শহীদ হন আসাদুজ্জামান বাচ্চু।

ফেঞ্চুগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকে জানান, পাক সেনারা সারকারখানা ও মনিপুর চা বাগানে তৈরি করে টর্চারসেল। এছাড়া যুবতী মেয়েদের উঠিয়ে নিয়ে সেখানে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করতো তারা।

ফেঞ্চুগঞ্জ পশ্চিমবাজারে অবস্থিত কাইয়ার গুদাম ছিল হায়েনাদের বন্দিশালা ও কসাই খানা। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনকে ধরে এনে বন্দিশালায় নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে মরদেহ ফেলে দেওয়া হতো কুশিয়ারা নদীতে।

একইভাবে মুক্তিযোদ্ধা নেওয়ার আলীকে এই বন্দিশালায় রেখে নির্যাতন করে নদী তীরে নামিয়ে ২৮টি গুলি ছুড়া হয় তার দেহে। গুলিতে ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয় নদীতে। এমন তথ্য জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম।

১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত হলে ঐতিহাসিক কাইয়ার গুদামে শত শত জনতার ভীড় জমে। গুদামের আশাপাশে ছিল স্বজনহারাদের আর্তনাদ। কালের সাক্ষী এই কাইয়ার গুদামের ভেতরে ঢুকতে এখনো কেউ সাহস পান না।

মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর আক্রমণে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে পালিয়ে যাবার পূর্বে পাকসেনারা উপজেলা সদর ও পাশ্ববর্তী রাজনপুর গ্রামে তাদের বিরাট গাড়ীবহর পুড়িয়ে দেয় এবং অন্য যুদ্ধ সামগ্রী নষ্ট করে ফেলে। পাক হানাদাররা কুশিয়ারা নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নেয়। আর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থান নেয় মুক্তিবাহিনী।

১০ ডিসেম্বরই হয় ভয়ঙ্কর সম্মুখ যুদ্ধ। এ সময় মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কিছু অংশ কুশিয়ারা নদীর ওপর রেলওয়ে সেতু দিয়ে উত্তরপাড়ে অগ্রসর হলে পাকসেনারা তাদের লক্ষ্য করে অতর্কিত গুলি চালায়। এতে সেতুর উপর থেকে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সারিবদ্ধ সদস্যরা মুহুর্তের মধ্যে কুশিয়ারা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অসংখ্য সদস্যরা শহীদ হয়েছিলেন তা আজও জানা যায়নি।

কৌশল পরিবর্তন করে পরদিন ১১ ডিসেম্বর উপজেলার কাসিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে কুশিয়ারা নদীর উত্তর পাড়ে পাকসেনাদের লক্ষ্য করে মর্টার সেল নিক্ষেপ করে তাদের ঘায়েল করতে সক্ষম হয় মুক্তিবাহিনী। এক পর্যায়ে মুক্তিযো্দ্ধা ও মিত্রদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে ঠিকতে না পেরে পাকসেনারা স্থানীয় মল্লিকপুর রাস্তা দিয়ে ইলাশপুর হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জের ছেড়ে সিলেটের দিকে পালিয়ে যায়।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৪৭ বছর পরও পাকিস্তানী জল্লাদখানা খ্যাত এই গুদাম গণকবরের স্বীকৃতি পায়নি, হয়নি কোন স্মৃতিস্তম্ব নির্মাণ।

কাইয়ার গুদামের ইতিহাস সর্বপ্রথম জানিয়েছিলেন সাংবাদিক বন্ধু ফরিদ উদ্দিন আজমানি। পরবর্তীতে এই ঐতিহাসিক গুদাম বেশ কয়েকবার ঘুরে দেখেছি। তথ্য সংগ্রহ করে নিউজ করেছি। এই গুদাম সম্পর্কে যে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছিলেন তাঁদের একজন ফেঞ্চুগঞ্জের প্রবীণ সাংবাদিক শ্রদ্ধেয় রিয়াজ উদ্দিন ইসকা।
করে নিউজ করেছি। এই গুদাম সম্পর্কে যে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছিলেন তাঁদের একজন ফেঞ্চুগঞ্জের প্রবীণ সাংবাদিক শ্রদ্ধেয় রিয়াজ উদ্দিন ইসকা।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আকরাম হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, ১১ ডিসেম্বর ফেঞ্চুগঞ্জ হানাদার মুক্ত হবার পর তিনি কাইয়ার গুদামে শুধু রক্তের ছাপ আর মানুষের পড়ে থাকা কাপড় দেখেছেন। অসংখ্য বাঙ্গালী নারীকে এখানে পাকিস্তানিরা টর্চার করেছে বলে জানান তিনি।স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন ইসকা জানান, নির্মম স্মৃতি বিজড়িত এই জায়গা পাকিস্তানীদের টর্চার সেল ছিল। অসংখ্য বাঙ্গালীকে এখানে হত্যা করে লাশ কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে।
২০১৭ সালে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছিলাম,অসংখ্য বাঙ্গালী নারীকে এই গুদামে এনে পাশবিক নির্যাতন করা হত। বিভিন্ন এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে এই গুদামের পাশে গুলি করে হত্যা করে পাশেই বয়ে চলা কুশিয়ারা নদীতে লাশ ফেলে দেওয়া হতো।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান,উপজেলার পশ্চিম বাজারের ছত্রিশ মৌজায় ২২ শতক জমির ওপর পাকিস্তান আমলে খোকা চান ভাটিয়ারির ছেলে মানিক চান ভাটিয়ারি মালিকানাধীন ছিল এই গুদাম। যা কাইয়ার গুদাম নামে পরিচিত ছিল। কাইয়া নামের এক মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীর নামানুসারে এটির নাম হয় কাইয়ার গুদাম।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই গুদামের সম্মুখভাগ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গুদামের পেছনের অংশ খুবই জরাজীর্ন।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আকরাম হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, ১১ ডিসেম্বর ফেঞ্চুগঞ্জ হানাদার মুক্ত হবার পর তিনি কাইয়ার গুদামে শুধু রক্তের ছাপ আর মানুষের পড়ে থাকা কাপড় দেখেছেন। অসংখ্য বাঙ্গালী নারীকে এখানে পাকিস্তানিরা টর্চার করেছে বলে জানান তিনি।

 প্রবীণ সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন ইসকা জানান, নির্মম স্মৃতি বিজড়িত এই জায়গা পাকিস্তানীদের টর্চার সেল ছিল। অসংখ্য বাঙ্গালীকে এখানে হত্যা করে লাশ কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। এই গুদামকে গণকবরের স্বীকৃতি দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।তিনি আরো জানান, এই গুদামটি বেশ কিছু দিন থেকে ময়নুল হোসেন জাহাঙ্গীর নামক একজনের দখলে রয়েছে। যার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রয়েছে যা প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে ফেঞ্চুগঞ্জের অনেক তরুণ দাবী করেছেন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বঙ্গবন্ধুর কোন ম্যুরাল বা প্রতিকৃতি নেই। তারা দাবী করছেন, ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায় অনেক সরকারী জমি আছে। এসব জায়গার যেকোন একটি স্থানে বঙ্গবন্ধুর একটি ম্যুরাল বা প্রতিকৃতি নির্মাণ করার দাবী করেছেন।

আমি নিজেও ভেবে দেখলাম, ফেঞ্চুগঞ্জ এ একটি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বা প্রতিকৃতি নির্মাণ করা উচিৎ।  বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অস্থায়ী প্রতিকৃতি তৈরি করে ত আর অনুষ্ঠান চালানোর নামে আইওয়াশ চলতে পারেনা!

পরিশেষে, ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্ত দিবসে জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা।

লিখেছেন- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক এবং অনলাইন এক্টিভিস্ট।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাউল সাধক চান মিয়া এবং আমার কিছু উপলব্ধি

"রজনী হইসনা অবসান  আজ নিশিতে আসতে পারেবন্ধু কালাচাঁন।। কত নিশি পোহাইলোমনের আশা মনে রইলো রে কেন বন্ধু আসিলোনা জুড়ায়না পরান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। বাসর সাজাই আসার আশেআসবে বন্ধু নিশি শেষে দারূন পিরিতের বিষে ধরিল উজান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। মেঘে ঢাকা আঁধার রাতে কেমনে থাকি একা ঘরে সাধক চাঁনমিয়া কয় কানতে কানতে হইলাম পেরেশান আজ নিশিতে আসতে বন্দু কালাচাঁন।"    গভীর নিশিতে ধ্যান মগ্ন হয়ে কালাচাঁনের অপেক্ষা করছেন সাধক।  সাধক চান মিয়ার শিষ্য বাউল সিরাজউদ্দিনের মতে এটি একটি রাই বিচ্ছেদ। কৃষ্ণের অপেক্ষায় রাধা নিশি বা রাতকে অনুরোধ করছেন 'রাত' যেন না পোহায়  কারণ তার কালা চান যে কোন সময় আসতে পারে। শব্দগুচ্ছ গুলো থেকে সহজেই উপলব্ধি হয় সাধক নিজ দেহকে রাধা আর আত্মাকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করেছেন। দেহ আত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সাধকের সাধনা।        বাউল সাধক চান মিয়া উপরোক্ত গানটি রচনা করেছেন। নেত্রকোনা জেলার খাটপুরা গ্রামে ১৩২৫ বঙ্গাব্দে সাধক চান মিয়ার জন্ম। পুরো নাম চান্দেজ্জামান আকন্দ হলেও বা...

বাউল, বাউলতত্ব এবং কিছু কথা

একজন ভদ্র বন্ধু বরের সাথে বাউল সম্প্রদায় নিয়ে বেশ তর্ক হলো রাতে। তর্কের সূত্রপাত ছিল বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী। ভাবলাম "বাউলতত্ত্ব"র আলোকে বাউলরা ভাববাদী নাকি বস্তুবাদী তা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা আবশ্যম্ভাবী। কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব লিখে নিজের মনোভাব বোঝানোর চেষ্টা করব।  শুরুতেই শক্তিনাথ ঝাঁ এর বস্তুবাদী বাউল বই থেকে কিছু কথা লিখতে চাই; বাস্তব জগত ও জীবনকে এরা কোন আনুমানিক যুক্তি বা আলৌকিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। জৈব রাসায়নিক ব্যাখায় এরা নারীর রজঃ এবং পুরুষের বিজে জীবন ও জগত সৃষ্টিকে ব্যাখা করে এবং চার ভূতকে প্রাকৃতিক সৃষ্টি মনে করে। এভাবে মানুষে, প্রকৃতিতে তৈরি করে প্রাণ, প্রাণী। অনুমান ভিত্তিক স্বর্গ, নরক, পরলোক, পুনর্জন্মাদি প্রত্যক্ষ প্রমাণাভাবে বাউল আগ্রাহ্য করে। মানুষ ব্যাতিরিক্ত ঈশ্বরও এরা মানে না। সৃষ্টির নিয়মকে জেনে যিনি নিজেকে পরিচালনা করতে শিখেছেন- তিনিই সাঁই। সুস্থ নিরোগ দীর্ঘজীবন এবং আনন্দকে অনুভব করার বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।।  বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী এর অনেক সূক্ষ বিশ্লেষণ শক্তিনাথের বস্তুবাদী বাউল বইটির মধ্যে আলকপাত করা হয়েছে। সাধারণ সমাজে এ ধা...

ভাইবে রাধারমণ

তখন কলেজের ছাত্র। বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় রেজা স্যারের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। কলেজের প্রথম দিনই স্যারকে খুব পছন্দ। তারপর স্যারের সাথে গল্প, সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। রীতিমত ফিজিক্স, বায়োলোজি ক্লাস ফাঁকি দিলেও বাংলা ক্লাস কখনই ফাঁকি দিতাম না। খুব উপভোগ করতাম স্যারের ক্লাস। হোস্টেল সুপার হিসেবে স্যার ( ওহী আলম রেজা) আমাদের সাথেই থাকতেন। আমরা আসার প্রায় নয় মাস পর স্যার এলেন সুপার হিসেবে। প্রতিদিন রাতে খাবার পরেই স্যারের রুমে গিয়ে আড্ডা হত, গানের আসর হত। স্যারের পিসিতে প্রায়ই গান শুনতাম আমরা। একদিন হঠাৎ করেই একটি গান স্যার প্লে করলেন 'আমার বন্ধু দয়াময় তোমারে দেখিবার মনে লয়। তোমারে না দেখলে রাধার জীবন কেমনে রয় বন্ধুরে।। কদম ডালে বইসারে বন্ধু ভাঙ্গ কদম্বের আগা। শিশুকালে প্রেম শিখাইয়া যৌবনকালে দাগা রে।। তমাল ডালে বইসারে বন্ধু বাজাও রঙের বাশি। সুর শুনিয়া রাধার মন হইলো যে উদাসি রে।। ভাইবে রাধা রমন বলে মনেতে ভাবিয়া। নিভা ছিল মনের আগুন কে দিলাই জ্বালাইয়া রে।' গানের কথাগুলো বেশ ভালো লেগে গেলো। পুর গানটি শুনে বুঝলাম গানটি সাধক রাধারম...