সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বরঃ বাংলাদেশের জন্মদিন ২৬ মার্চ

আজ মহান বিজয় দিবস।  পাকিস্তানী হানাদারদের পরাজিত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল প্রিয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

যে কারণে আমি নিচের কথাগুলো লিখছি সেটার মূল কারণ হলো অনেকেই দেখলাম 'শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ' বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন। এটি একটি ভুল ইতিহাস চর্চা।

বাংলাদেশের জন্মদিন হচ্ছে ২৬ মার্চ। যেদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। সেদিন থেকেই বাংলাদেশ স্বাধীন অর্থাৎ বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্র পৃথিবী ঘোষিত হয়েছিল। ২৫ মার্চ রাতেই আমাদের স্বাধীনতার ঘোষনা অর্থ্যাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহর থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশ-এই বাংলাদেশের প্রতি সিংহভাগ মানুষ আনুগত্য প্রকাশ করেছে, এর সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রান দিয়েছে, শুধু দালালরা এই রাষ্ট্রের বিরোধীতা করেছে।
যদি ২৫ মার্চ রাত থেকে এ আমার দেশ না হয় তাহলে পাকিস্তানী সেনাদের হানাদার বলবো কোন যুক্তিতে?

২৫ মার্চের তিন সপ্তাহের মধ্যেই অর্থাৎ এপ্রিলেই তো আমাদের নিজেদের সরকার, নিজেদের বাহিনী ঘোষিত হয়েছে। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ ও করেছিলেন৷ সুতরাং ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্মদিন হতে পারেনা, এই চির স্মরণীয় দিনটি বাংলাদেশের বিজয় উল্লাসের দিন।

অন্যদিকে যদি বলি তবে বলতে হবে,১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের আগেই ভারত এবং ভূটান আমাদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়ে দেয়। অর্থাৎ আমাদের দেশের জন্ম যদি ২৬শে মার্চ না হয়ে থাকে তাহলে স্বীকৃতি দেয়ার কোন সুযোগ আসে না। ভারত এবং ভুটান এবং পরবর্তীতে অপরাপর দেশগুলো স্বীকৃতি কাকে দিয়েছিল? দিয়েছিল বাংলাদেশকে। তাঁরা ২৬শে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণাকে ধরে স্বীকৃতি দেয়।

অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ আমাদের দেশের জন্মদিন এবং ১৬ ডিসেম্বর  আমাদের শত্রু মুক্তির দিন।

সবাইকে আবারো বিজয়ের শুভেচ্ছা, জয় বাংলা।



লিখেছেন- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক, অনলাইন এক্টিভিস্ট

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাউল সাধক চান মিয়া এবং আমার কিছু উপলব্ধি

"রজনী হইসনা অবসান  আজ নিশিতে আসতে পারেবন্ধু কালাচাঁন।। কত নিশি পোহাইলোমনের আশা মনে রইলো রে কেন বন্ধু আসিলোনা জুড়ায়না পরান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। বাসর সাজাই আসার আশেআসবে বন্ধু নিশি শেষে দারূন পিরিতের বিষে ধরিল উজান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। মেঘে ঢাকা আঁধার রাতে কেমনে থাকি একা ঘরে সাধক চাঁনমিয়া কয় কানতে কানতে হইলাম পেরেশান আজ নিশিতে আসতে বন্দু কালাচাঁন।"    গভীর নিশিতে ধ্যান মগ্ন হয়ে কালাচাঁনের অপেক্ষা করছেন সাধক।  সাধক চান মিয়ার শিষ্য বাউল সিরাজউদ্দিনের মতে এটি একটি রাই বিচ্ছেদ। কৃষ্ণের অপেক্ষায় রাধা নিশি বা রাতকে অনুরোধ করছেন 'রাত' যেন না পোহায়  কারণ তার কালা চান যে কোন সময় আসতে পারে। শব্দগুচ্ছ গুলো থেকে সহজেই উপলব্ধি হয় সাধক নিজ দেহকে রাধা আর আত্মাকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করেছেন। দেহ আত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সাধকের সাধনা।        বাউল সাধক চান মিয়া উপরোক্ত গানটি রচনা করেছেন। নেত্রকোনা জেলার খাটপুরা গ্রামে ১৩২৫ বঙ্গাব্দে সাধক চান মিয়ার জন্ম। পুরো নাম চান্দেজ্জামান আকন্দ হলেও বা...

বাউল, বাউলতত্ব এবং কিছু কথা

একজন ভদ্র বন্ধু বরের সাথে বাউল সম্প্রদায় নিয়ে বেশ তর্ক হলো রাতে। তর্কের সূত্রপাত ছিল বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী। ভাবলাম "বাউলতত্ত্ব"র আলোকে বাউলরা ভাববাদী নাকি বস্তুবাদী তা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা আবশ্যম্ভাবী। কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব লিখে নিজের মনোভাব বোঝানোর চেষ্টা করব।  শুরুতেই শক্তিনাথ ঝাঁ এর বস্তুবাদী বাউল বই থেকে কিছু কথা লিখতে চাই; বাস্তব জগত ও জীবনকে এরা কোন আনুমানিক যুক্তি বা আলৌকিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। জৈব রাসায়নিক ব্যাখায় এরা নারীর রজঃ এবং পুরুষের বিজে জীবন ও জগত সৃষ্টিকে ব্যাখা করে এবং চার ভূতকে প্রাকৃতিক সৃষ্টি মনে করে। এভাবে মানুষে, প্রকৃতিতে তৈরি করে প্রাণ, প্রাণী। অনুমান ভিত্তিক স্বর্গ, নরক, পরলোক, পুনর্জন্মাদি প্রত্যক্ষ প্রমাণাভাবে বাউল আগ্রাহ্য করে। মানুষ ব্যাতিরিক্ত ঈশ্বরও এরা মানে না। সৃষ্টির নিয়মকে জেনে যিনি নিজেকে পরিচালনা করতে শিখেছেন- তিনিই সাঁই। সুস্থ নিরোগ দীর্ঘজীবন এবং আনন্দকে অনুভব করার বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।।  বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী এর অনেক সূক্ষ বিশ্লেষণ শক্তিনাথের বস্তুবাদী বাউল বইটির মধ্যে আলকপাত করা হয়েছে। সাধারণ সমাজে এ ধা...

ভাইবে রাধারমণ

তখন কলেজের ছাত্র। বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় রেজা স্যারের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। কলেজের প্রথম দিনই স্যারকে খুব পছন্দ। তারপর স্যারের সাথে গল্প, সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। রীতিমত ফিজিক্স, বায়োলোজি ক্লাস ফাঁকি দিলেও বাংলা ক্লাস কখনই ফাঁকি দিতাম না। খুব উপভোগ করতাম স্যারের ক্লাস। হোস্টেল সুপার হিসেবে স্যার ( ওহী আলম রেজা) আমাদের সাথেই থাকতেন। আমরা আসার প্রায় নয় মাস পর স্যার এলেন সুপার হিসেবে। প্রতিদিন রাতে খাবার পরেই স্যারের রুমে গিয়ে আড্ডা হত, গানের আসর হত। স্যারের পিসিতে প্রায়ই গান শুনতাম আমরা। একদিন হঠাৎ করেই একটি গান স্যার প্লে করলেন 'আমার বন্ধু দয়াময় তোমারে দেখিবার মনে লয়। তোমারে না দেখলে রাধার জীবন কেমনে রয় বন্ধুরে।। কদম ডালে বইসারে বন্ধু ভাঙ্গ কদম্বের আগা। শিশুকালে প্রেম শিখাইয়া যৌবনকালে দাগা রে।। তমাল ডালে বইসারে বন্ধু বাজাও রঙের বাশি। সুর শুনিয়া রাধার মন হইলো যে উদাসি রে।। ভাইবে রাধা রমন বলে মনেতে ভাবিয়া। নিভা ছিল মনের আগুন কে দিলাই জ্বালাইয়া রে।' গানের কথাগুলো বেশ ভালো লেগে গেলো। পুর গানটি শুনে বুঝলাম গানটি সাধক রাধারম...