সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনঃ স্বার্থ কার?

 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন' শুনলেই মনে হবে যেন আপনি কিছু একটা অনলাইনে লিখে ফেলেছেন এরজন্য আপনি আজ জেলে বন্দি- এমন একটি চিত্র আমাদের চোখে ভাসতে থাকে। বর্তমানে এমন একটি অবস্থা দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশে যে কিছু লিখলেই আপনাকে জেলে যেতে হবে। আসলেই কি জেলে যেতে হচ্ছে? কেন'ই বা যেতে হচ্ছে?  স্থানীয় কিছু আলোচনা দিয়ে শুরু করি। স্থানীয় পর্যায়ে সংবাদকর্মী বা লেখকদের এমন এক অবস্থায় আছেন নিউজ প্রকাশ ত দূরের কথা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যদি কিছু লিখেন অর্থাৎ তার লিখাটা যদি স্থানীয় কোন প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের বিপক্ষে যায় তাহলেই তাকে রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ৷ দিনের পর দিন তাকে নির্জনে বেঁধে রেখে করা হয় মানসিক নির্যাতন, অথবা গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ।  প্রশ্ন হচ্ছে এই নির্যাতিত মানুষগুলো কারা, এই নির্যাতিত মানুষ হচ্ছেন এমন কেউ কেউ যারা স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বা কোন ক্রাইমের ব্যাপারে এক বাক্যের স্ট্যাটাস দিয়ে স্থানীয় কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি বা মহলের আক্রোশের শিকার হয়েছেন। নির্যাতিত ব্যক্তি হতে পারেন যেকোন রাজনৈতিক মতাদর্শের। তিনি হতে পারেন আওয়ামীলীগপন্থী, হতে পারেন বিএনপি ব...

টিকা' টিপ্পনী

  আমি গত পরশু টিকা নিয়ে এসেছি। সবাই জিজ্ঞেস করছে, “কেমন লাগছে?” কিছু একটা চমকপ্রদ  উত্তর দিতে পারলে ভালো লাগতো। শরীরের ভিতর বেয়াদব-বেয়াক্কেল-বেতমিজ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক তৈরি করার বিশাল দজ্ঞযজ্ঞ শুরু হয়ে গেছে কিন্তু বাইরে থেকে তার কিছুই বুঝতে পারছি না। এমনকি হাতের যেখানে সুচ ফোটানো হয়েছে সেখানেও কোনও ব্যথা নেই। বাংলাভাষায় ‘শরীর ম্যাজম্যাজ’ বলে একটা অসাধারণ  কথা আছে—গতকাল সেই কথাটা বলা যায় কিনা চিন্তাভাবনা করেছি কিন্তু জোর দিয়ে বলতে পারিনি। টিকা দিতে যাওয়ার আগে আমার ছেলে-মেয়ে দেশের বাইরে থেকে জানিয়েছে “সেজেগুজে যাবে, অবশ্যই ছবি তুলে পাঠাবে।” পুরুষ মানুষ কেমন করে সাজগোজ করে বিষয়টা আমার জন্য দুর্বোধ্য হওয়ার কারণে সেটা আমার স্ত্রীর জন্যে প্রযোজ্য বলে ধরে নিয়েছি। টিকা নেওয়ার সময় ছবি তোলা হয়েছে, হাতে সুচ ফোটানো নিয়ে আমার ভেতরে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছিল বলে মাস্ক দিয়ে মুখের প্রায় পুরোটুকু ঢেকে থাকার পরও চেহারায় এক ধরনের ফাঁসির আসামির ভাব চলে এসেছে! তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো টিকা দেওয়ার জন্য সুচ ফোটানোর সময় বিন্দুমাত্র ব্যথা লাগেনি। এই সির...

গতিহারা বাম রাজনীতি

  দেশের বামপন্থি দলগুলোতে সাংগঠনিক দুর্বলতা চরমে। ফলত তারা গতিহারা হয়ে পড়েছে। গ্রুপিং-কোন্দল আর অন্তঃকোন্দলের শেষ নেই। ফলে রাজনীতির মাঠে সরকারকে বড় কোনো ধাক্কা দিতে পারছে না বাম দলগুলো। আবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জোটের বাইরে বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিলেও, সেখানে মতভেদ চরমে। দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশলগত পার্থকও কম নয়। ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনেও তাদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাম জোট ছোট-বড় আন্দোলন করছে। দলগুলোর মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশলগত পার্থক্য আছে। এমনকি কোনো কোনো ইস্যুতে দলগুলোর মধ্যে নানা ধরনের টানাপোড়েন চলছে। ফলে মাহমুুদুর রহমান মান্না ও নুরুল হক নূরদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে কিছু বাম নেতার অংশগ্রহণ নিয়ে জোটের ভিতর ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়াও আছে। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাম দলগুলোর কিছু সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে সরকারকে বড় ধাক্কা দিতে পারছে না। তবে শাসক দলের জুলুম-অন্যায় ও অবিচারের কথা জনগণের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। এই যে পাটকলগুলো ...

কিশোর অপরাধ রোধে সমাজের দায়িত্ব

  কিশোর অপরাধ প্রতিকারে ইসলামের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত। সঠিক পন্থায় শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশ না হওয়ার কারণেই মূলত কিশোর অপরাধ সংঘটিত হয়। এ ছাড়াও যে সব কারণে এই ব্যাধির সৃষ্টি হয়, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে কিশোর অপরাধ প্রতিকার করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ইসলাম সর্বজনস্বীকৃত প্রতিরোধমূলক ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমে তা প্রতিকার করেছে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থায় ইসলাম বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। আর সংশোধনমূলক ব্যবস্থায় নিয়েছে বাস্তবসম্মত নানা পদক্ষেপ। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা বলতে বুঝায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে যাতে প্রথম থেকেই অপরাধ প্রবণতার সৃষ্টি না হয়, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করা। যেসব কারণে শিশু-কিশোরদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা দেখা দেয়, সেগুলোকে আগে থেকে দূর করাই এ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। মানবজীবন কতগুলো স্তর বা ধাপের সমষ্টি। জীবন পরিক্রমায় এই স্তর বা ধাপ অতিক্রম করে অগ্রসর হতে হয়। শিশু-কিশোরদের জীবন-প্রকৃতি বড়দের থেকে আলাদা। তাদের চাহিদা এবং বিকাশকালীন প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাও ভিন্নতর। বিধায় পরিবেশ পরিস্থিতি শিকার হয়ে ...

'আমি একজন ভাষাশিক্ষার ছাত্র'

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি। ভাষা দিবসে কি হঠাৎ করেই ভাষা প্রেমিক হয়ে গেলাম! না, একদম তা নয়। ভাষা শিক্ষার গুরুত্ব এবং কেন শিখতে হচ্ছে একটি ভাষা, বা না শিখলে কি হবে সেই ব্যপার গুলো চিন্তা করছিলাম।  প্রথমেই বলে নেই,  ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য পাকিস্তানি শাসকদের পালিত পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলার দামাল ছেলেদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। তাঁদের সেই রক্তের ঋণ আমি বা আমরা কখনোই শোধ করতে পারবো না। তাদের প্রাণ বিসর্জনের কারণে আজ হয়তো কথাগুলো বাংলা অক্ষরে লিখতে পারছি, নয়তবা মায়ের মুখের ভাষা বাদ দিয়ে আজও লিখতে হতো, পড়তে হতো, বলতে হতো উর্দু ভাষা। উর্দু যাদের মায়ের ভাষা তারা উর্দুতে কথা বলুক সেই পেশোয়ার বা রয়েল পিণ্ডির মানুষেরা কিন্তু সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন,  তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ বয়ে ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের বেশি ভূমিতে যারা জোর পূর্বক উর্দু চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল সেই কায়েদে আজম জিন্নাহ সহ উনাদের প্রতি রইল একগুচ্ছ ঘৃণা। ভাষাগত রেসিস্টরা নিপাত যাক।  শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের শিলচরে মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য, ১৯৬১ সালের ১৯মে তারিখে যে শিলচর স্টেশনে ...

বসন্ত বাতাসে সই গো

 আজ পহেলা ফালগুন-১৪২৭ বঙ্গাব্দ। বিপুল ঐশ্বর্যের অধিকারী ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় আজি দখিন-দুয়ার খোলা/ এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো…। প্রেমের কবি নজরুলের উচ্চারণ এলো খুনমাখা তূণ নিয়ে/ খুনেরা ফাগুন…। অদ্ভুত এক শিহরণ এখন। মনে তো বটে। সেইসঙ্গে বনেও। রূপ লাবণ্যে জেগে উঠেছে প্রকৃতি, রঙিন চারপাশ। বৃরে নবীন পাতায় আলোর নাচন! গোলাপ, জবা, পারুল, পলাশ, পারিজাতের হাসি। ঘরছাড়া মৌমাছি। কোকিলের কুহুতান। সবই জানিয়ে দিচ্ছে আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে…। আমাদের বাইল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম গেয়ে ওঠেন বসন্ত বাতাসে সই গো/ বসন্ত বাতাসে/ বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে…। এভাবে বসন্ত এলে উচাটন হয়ে ওঠে মন। পুরনো বেদনা, হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি ভালবেসে এর পেছনে ছুটতে ইচ্ছে করে। তবে শুধু মানুষের জীবনে নয়, পাখিরাও প্রণয়ী খোঁজে এ সময়। নতুন ঘর বাঁধে। মৌমাছিরা মধুর খোঁজে হন্যে হয়। এক ফুল থেকে অন্য ফুলে ছোটে। সব মিলিয়ে অনন্য এক ঋতুরাজ বসন্ত। কবি সুভাস মুখোপাধ্যায়ের কবিতার খাতায় তাই উঠে আসে-‘ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত-’র মতো কবিতা। যুগ যুগ ধরে প্রেমপাগল মানব-মানবী, তরুণ-তরুণী বসন্তকে ন...

'বসন্ত আসুক বাংলাদেশে'

 সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত। আসলে তিনি কোন কারণে বলেছিলেন সেটা তিনি ভালো জানবেন, কারণ কবিদের মনের ভাষা বোঝা বড় কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু আমিও একমত, আজ'ই বসন্ত।  ছয় ঋতুর ক্রমাগত ঘূর্ণিপাকে প্রকৃতিতে বসন্ত এসেছে। গাছে ফুল ফুটবে, রঙিন হবে চারপাশ, মৌমাছি সংগ্রহ করবে মধু। এ'ত গেলো প্রকৃতির বসন্ত। কিন্তু বাংলাদেশের চলমান সামাজিক পরিস্থিতির 'বসন্ত' কি আদৌ আসবে, এসেছিলো কি কখনো? পত্রিকার পাতা খুলতেই প্রতিদিন হাজারো সংবাদে মনে হয় ক্রমাগত আমাদের ধেয়ে আসছে কালবৈশাখী। দুই যুগেও হয়তো ফাগুন আসেনি। কখনো যদি পরিস্থিতিতে একটু ফাগুনের ছোঁয়া লাগে, নিমিষেই তা ঢাকা পড়ে কালো মেঘের নতুন কোনও ঝড়ে।  কাঠামোগত দিক থেকে আমাদের বাংলাদেশে যে বসন্ত সেই দুই হাজার দশ সালের পর থেকে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু আমার মানসিকতার মানদন্ড, আমাদের সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধ, আমাদের ধর্মগত উদারতার কতখানি রঙিন হয়েছে। শুধুমাত্র বর্তমানে আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যেমন- ফেইসবুক এবং ইউটিউবের কমেন্ট কন্টেন্টগুলো পড়ে দেখি তাহলেই অতি সহজেই নির্ণয় করা যাবে আমাদের সামাজিকরণ ফাগুনে কতটুকু ফুল ফু...