দুটি ঘটনা'ই সামঞ্জস্যপূর্ণ । আফগানিস্তানের নাজুক অবস্থা আমরা সবাই জানি। এখানে৷ বেশি আর ব্যাখা করতে হবেনা। গত দুই আগে আফগান শরনার্থী প্রায় ২১ হাজার মানুষকে কানাডা সরকার আশ্রয় দেবেন বলেছেন। ফ্রান্স সরকারও আফগানিদের আশ্রয় দানে বেশ নমনীয় এবং আমেরিকাও দিচ্ছে। উগ্র সন্ত্রাসী কথিত জিহাদের নামে বিশ্বব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি করা তালেবানদের হাতে একপ্রকার পুরো জিম্মি আফগানের বাসিন্দারা। গতকাল প্যারিসে সার্দেগুল এয়ারপোর্টে ১২৮ জন ফরাসী নাগরিক সহ ২৫০০ জন আফগানিস্তানের নাগরিক চলে এসেছেন সরাসরি।
যাই হোক আফগানিস্তানের অবস্থা ব্যাপক হারে এখানে আলোচনা না করলাম। কিন্তু উদ্ভট এবং দুর্বিষহ একটা সংকেত আমরা বাংলাদেশিরা পেলাম, কতিপয় কিছু বাংলাদেশি শিক্ষিত তালেবানি মানসিকতার লোকজনের মনের লিখিত রূপের অবস্থা এবং ক্যামেরার সামনে তাদের স্টেটমেন্ট দেখে।
ঢাকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আসিফ নজরুল তিনি যেই কথা লিখিছেন, আমি মনে করি উনি সোজাসাপটা তালেবানি মানসিকতা পোষণ করেন। অতি ব্যাখায় না দিয়ে, সহজ কথায় উনি যদি কোন ব্যাপারে এই তালেবানের অবস্থা দিয়ে বা আফগানের অবস্থা দিয়ে উদাহরণ টানেন তাহলে বোঝা যায় বাংলাদেশের কতটা নাজুক অবস্থা উনি চিন্তা করতে পারেন। ডক্টর আসিফ নজরুল অতি শিক্ষিত, এবং জ্ঞানী মানুষ। উদাহরণ স্বরূপ ধরলাম, উনি সরকারের কঠিন সমালোচক। তিনি আরও সুষ্ঠু এবং কঠোর ফিল্টারিং নির্বাচন চান, ফাইন মেনে নিলাম। তিনি উদাহরণ টানতে পারতেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদায়ের কথা, বা অন্য সভ্য কোন রাজনৈতিক অবস্থার কথা। কিন্তু এমনই এক উদাহরণ দিয়ে তিনি বসলেন মনে হলো হুমকি দিচ্ছেন। এরকম লোকদের হাতে বাংলাদেশের ক্ষমতা গেলে আগামীতে কি হতে পারে তা নিচে বলছি।
আরেকজন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, "অনেককে কিন্তু হেলিকপ্টারের ডানা ধরে ঝুলতে হবে। আফগানিস্তান থেকে আমরা কী শিক্ষা নিতে পারছি যে, জনগণের জয় একদিন না একদিন হবেই। " এ কথা গুলো বিএনপি এই নেতার নিজের মুখের কথা, বড় বড় মার্কিং বল্ড ফন্টে গণমাধ্যমে এসেছে।
একটু বিশ্লেষণ করি উনার কথা। প্রথমেই তিনি অনেককে যে হেলিকপ্টারের ঝুলার কথা বলেছেন, এই ঝুলানো অবস্থায় দেখতে তিনি মেবি পছন্দ করেন। হেলিকপ্টারের জানালা ধরে ঝুলে কেউ দেশ ছাড়লে তিনি ব্যাপারটা হয়তো উপভোগ করবেন। বিএনপির মত দলের একজন সিনিয়র নেতা যদি এই ব্যাখায় হুমকি দিয়ে যান তাহলে ক্ষমতায় উনারা বসলে আসলেই কি অবস্থাটা হতে পারে দেশের, ভাবা যায়। একজন জাতীয় রাজনীতিবিদ হিসেবে যদি এই সিনিয়র নেতাকে ধরি তাহলে উনাদের এই এগ্রেসিভ মনোভাব বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যাবে! সহজ হিসেবে আমার কাছে অনেক কিছুই৷ দ্বিতীয়ত, উনি আফগানিস্তানের উদাহরণ টানলেন। একজন দলের নেতা যারা ক্ষমতামুখী মানুষ, তিনি যদি একটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের উদাহরণ টানেন, তবে আজকের বাংলাদেশ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তারা টেনে পিছনে কতখানি পিছনে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং যেতে পারবেন তা নিচের অংশে আবার আসবে। প্রথম অংশের মূল কথা একটাই তালেবানি মানসিকতায় লিপ্ত জ্ঞানপাপীদের অন্তত একজন বাংলাদেশি মানুষ হিসেবে আমি কশ্চিন কালেও ক্ষমতায় চাই না, প্রশ্নই আসেনা।
দ্বিতীয় প্রসঙ্গ হচ্ছে, ২০০৪ সালের। আজ যারা তালেবান আফগানিস্তানের উদাহরণ টানেন,রাষ্ট্র ক্ষমতায় তারাই ছিলেন। মসনদে বসে তারাই লালন পালন করছিলেন তালেবানীদের বাংলা ভার্সন। ২১ আগস্ট। সেই রক্তঝরা আগস্টের একটি কালো অধ্যায়। সেদিন আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে হয়েছিল গ্রেনেড হামলা। ১ টি দুটি নয় ১১ টি বোমা ব্লাস্ট করানো হয়েছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য। কিন্তু সেদিন তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। নিহত হয়েছিলেন ২৪ জন, আহত সাড়ে তিনশ এর বেশি নেতা কর্মী।
২১ আগস্ট, এই দুঈ শব্দ শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে তৎকালীন মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী আইভি রহমানের পা হারানো ক্ষত বিক্ষত ছবি এবং প্রয়াত বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এবং ঢাকার প্রথম মেয়র হানিফের রক্তে ভেজা ছবিগুলো। গা শিউরে উঠে এসব ছবি দেখলে। বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সেদিন ছিলেন বিমুর্ষ, কথা বাক্যহীন একজন মানুষ। এটিএন এর ক্যামেরা সামনে, তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। স্পষ্ট মনে আছে, তিনি শুধু একটি কথাই বলে যাচ্ছেন-" এভাবে বাংলাদেশকে আপনারা মৌলবাদীদের হাতে দিয়েন না, দিয়েন না। জিল্লুর রহমানের সেই কথার সাথে আমি পুরোপুরি একমত, আমি এক শব্দে আমি একমত, রক্ত বিন্দু থাকা পর্যন্ত এই বাংলাদেশকে মৌলবাদীদের হাতে ছেড়ে দেব না, আমরা দিতে পারিনা। আদালতের এজলাস থেকে বের হয়ে ঐ দিন কান্না করছিলেন আইভি রহমানে ছেলে, বর্তমান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। একমাত্র তিনি জানেন উনার মা হারানর জ্বালা, ব্যাথা। খেতে, শুইতে, গল্প করতে, সুখ, দুঃখ, কষ্টে, আনন্দে একমাত্র তিনিই জানেন আইভি রহমান উনার মা, উনার জীবনে কতখানি কিভাবে ফিল করছেন। এসব আমি বা আপনি কেউ বুঝব না, অন্তত পাপন বা পাপনের দুই বোনের মত করে মোটেও নয়। কারণ উনাদের যে মা।
সারা পৃথিবীর চোখ সেদিন বাংলাদেশে। কি হচ্ছে বাংলাদেশে ! কোন দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ! পুরোবিশ্ব সেদিন ছিল তাকিয়ে। ঢাকা মেডিক্যালে সেদিন এটিএন এর ক্যামেরা রিপোর্টার। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাজার মানুষ ঢাকা মেডিক্যালের সামনে। আহাজারি , হাহাকার। এক একজন রিপোর্টারের মুখের দিকেও তাকানো যাচ্ছেনা। আহত ফটো সাংবাদিক, ক্যামেরা পার্সনরা কোন মতে বলে যাচ্ছেন সেই ঘটনার কথা।
আরেকটু বলি, ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল, দেশের ভয়ানক অবস্থা।দেশের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে বাচ্চারা কোথাও খেলার জন্য প্র্যাকটিস করতে গেলে তাদের ব্যাগ, অথবা ব্যাডমিন্টন খেলার র্যাকেট প্যাকেট খুলে চেক করা হত। মানুষের মনে এতটাই আতঙ্ক ছিল যে পাবলিক বাসে বা ট্রেনে কোন দাড়িওয়ালা ভদ্রলোকের ব্যাগ বা ব্রিফকেস সাথে থাকলেই মানুষজন আতঙ্কে চোখ বাঁকা করে তাকাতো। গোটা বাংলাদেশ ছিল বোমায় প্রকম্পিত। বিএনপি জামায়াতের দুঃশাসন। জামাতুল মুজাহিদীন, হরকাতুল জিহাদ, আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, মুফতি হান্নানের মত দুর্ধর্ষ জঙ্গীদের উত্থান। কিন্তু তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাবর, খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, মোসাদ্দেক ফালু, আরাফাত রহমান কোকরা তখন হাওয়া ভবনে এসির ঠান্ডা হাওয়া খাওয়া গিলাতে সদা ব্যস্ত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াত শিবিরকে কোলে বগলে নেয়া বিএনপি যখন দেশের অবস্থা নিয়ে কথা তুলে তখন আমার হাসি পায়। বেগম খালেদা জিয়া আর তার তারেক কোকো ফালু বাবর দুলু সেদিন কি করেছিল তা কি ভুলে গিয়েছেন! প্রতিহিংসার রাজনীতির কথা যারা তুলেন তারা কি ভুলে গেছেন সেদিনের নৃশংসতার কথা। এক রিপোর্টে তাদের সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী বলেছিলেন, কিছুতেই তৎকালীন সরকার এর দায় এড়াতে পারে না। তাদের দলের, তাদের আমলের মন্ত্রীর কথা থেকেই বলি, এই দায় কার ? সেই প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নয়কি? আপনারা কি বলবেন জানিনা! আমি বলছি সেই দায় নয়, সেই ছক নৃশংস ছক একেছিল খালেদা জিয়ার তৎকালীন মন্ত্রীসভা।
সেইদিনের সেই ঘটনা, সময় তখন বিকাল ৫টা ২২ মিনিট। 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' বলে বক্তৃতা শেষ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তাঁর হাতে থাকা একটি কাগজ ভাঁজ করতে করতে এগুচ্ছিলেন ট্রাক থেকে নামার সিঁড়ির কাছে। মুহূর্তেই শুরু হলো নারকীয় গ্রেনেড হামলা। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে লাগল একের পর এক গ্রেনেড। মুহূর্তেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হলো জীবন্ত বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায় ঘাতকরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১৩টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই রক্ত-মাংসের স্তূপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। রক্তগঙ্গা বয়ে যায় এলাকাজুড়ে।
ঘাতকদের প্রধান লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনা। বিষয়টি বুঝতে পেরে ট্রাকে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ নেতারা ও শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক মানবঢাল রচনা করে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন বঙ্গবন্ধু কন্যাকে। নেতা ও দেহরক্ষীদের আত্মত্যাগে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান শেখ হাসিনা। গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ কেড়ে নিতে না পেরে ওদিন শেখ হাসিনার গাড়িতে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছিল ঘাতকরা। পরিকল্পিত ও টার্গেট করা ঘাতকদের নিক্ষিপ্ত গুলি ভেদ করতে পারেনি শেখ হাসিনাকে বহনকারী বুলেটপ্রুফ গাড়ির কাঁচ। শেখ হাসিনাকে আড়াল করে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে জীবন বিলিয়ে দেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান। নারকীয় এই হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দের কারণে বাম কান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শেষ পর্যন্ত বাম কানে শ্রবণশক্তি হারান শেখ হাসিনা। দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার এতদিন পরও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারনেনি তিনি।
২১ আগস্টের সেই রক্তাক্ত ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। আর এ হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও দলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৪ আগস্ট মারা যান। আহত হওয়ার পর প্রায় দেড় বছর মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হেরে যান আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা ও প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ। রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় নিহত অন্যরা হলেন মোসতাক আহম্মদ সেন্টু, শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), হাসিনা মমতাজ রীনা, রিজিয়া বেগম, রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, লিটন মুন্সী, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন সর্দার, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি (তৎকালীন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য) জিল্লুর রহমান, প্রয়াত আবদুর রাজ্জাক, আমির হোসেন আমু, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, কাজী জাফর উল্লাহ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা আখতার, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন, মামুন মলি্লকসহ আহত হোন ৫ শতাধিক আওয়ামী লীগ।
এই মামলা নিয়ে অনেক সংশয় প্রকাশ করেছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। আলোচিত এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌসুঁলি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ রেজাউর রহমান জানিয়েছেন, ১৩ বছর পর বিচারের শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ত্রয়োদশ বার্ষিকীর একদিন বাদে মঙ্গলবারই মামলা দুটির সাফাই সাক্ষ্যের দিন ধার্য রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা মতে,আসামি পক্ষের জমা দেওয়া ২০ জনের সাফাই সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনেরই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এরপর হবে যুক্তিতর্কের শুনানি। এর পর হবে রায়। ফাইল মতে জানা যায়, মামলাটিতে জামিনে ও কারাগারে থাকা ৩১ আসামির আত্মপক্ষ শুনানি শেষ হয়। শুনানিতে উপস্থিত আসামিরা সবাই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জন পলাতক আসামি আত্মপক্ষ শুনানির সুযোগ পাননি। হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলা দুটিতে রাষ্ট্রপক্ষে ৪৯১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। এই আদালতের বিচারক শাহেদ নুরুদ্দিন পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের মাঠে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে মামলাটির শুনানি নিচ্ছেন। ২২ আগস্ট মতিঝিল থানার তৎকালীন এসআই ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে এই মামলাটির তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠে, যা পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে। থানা পুলিশ, ডিবির হাত ঘুরে সিআইডি এই মামলার তদন্তভার পায়। ঘটনার চার বছর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালের ১১ জুন মোট ২২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটির অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে। সিআইডির বিশেষ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩ জুলাই আসামির তালিকায় আরও ৩০ জনকে যোগ করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। ২০১২ সালের ১৮ মার্চ তারিখে সম্পূরক অভিযোগপত্রের ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। খালেদা জিয়ার ছেলে লন্ডনে থাকা তারেককে পলাতক দেখিয়ে তখন অভিযোগ গঠন হয়েছিল। খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউকও এই মামলার আসামি। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরীর সঙ্গে আসামির তালিকায় রয়েছেন জোট সরকার আমলের তিন তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন, মুন্সি আতিকুর রহমান ও আব্দুর রশীদ। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, ঢাকার সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলামও এই মামলার আসামি। আসামিদের মধ্যে জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। বাবর, পিন্টুসহ ২৩ আসামি রয়েছেন কারাগারে; জামিনে আছেন সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফ ও সাবেক ৩ আইজিপিসহ আটজন। তারেক, কায়কোবাদসহ পলাতক আসামি ১৯ জন।
রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা খুব যে দীর্ঘ তা কখনই দাবী করব না, কিন্তু ছোট একজন মানুষ হিসেবে, ছোটমোট এক রাজনৈতিক ফ্যামেলির মানুষ হিসেবে, আমার বাবার রক্ত যেহেতু আমার রক্তে প্রবাহমান সেই হিসেন থেকেই বা অল্প অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি জঙ্গী মৌলবাদীদের বারবারভ টার্গেট ছিল শেখ হাসিনা। এখনো ভয় হয় শংশয় হয়। একজন মানুষ হিসেবে, একজন বাঙ্গালী হিসেবে, একজন বঙ্গবন্ধু ভক্ত হিসেবে, একজন শেখ হাসিনাকে পছন্দ করি হিসেবে বলছি, অবশ্যই অবশ্যই শেখ হাসিনার ভালো চাই, সুস্থতা চাই। বিভিন্ন ইস্যুতে মন্ত্রী এমপি বা রাজনীতির সমালোচনা করা থাকতেই পারে, থাকবে, রাজনীতিতে সমালোচনা সমীকরণ স্বাভাবিক। কিন্তু আমি এটা বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা না থাকলে, তিনি ক্ষমতায় না থাকলে সাকা চৌধুরীর মত একজন স্বঘোষিত স্বাধীনতা বিরোধীর কখনোই বিচার হত না। মীর কাশেমের মত টাকার কুমিরকে, একজন ধর্ষক খুনির বিচার হত না শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে। আমি সাধুবাদ জানাই যারা জামায়াত শিবির নিষিদ্ধের কথা বলছেন। যারা জামায়াত শিবির বিরোধী আমি তাদের সাথে আছি তা যেকোন সংগঠন হোক, রাজনৈতিক বা সামাজিক যাই হোক। আমি এই দাবী জানাই, শেখ হাসিনার শাসনামলেই এদের নিষিদ্ধ করা হোক। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার করা হোক। ২১ আগস্ট মামলার পালিয়ে থাকা আসামী তারেক, কায়কোবাদসহ পলাতক ১৯ জন আসামিকে এরেস্ট করা হোক,তারেক রহমান সহ বিদেশী পালিয়ে থাকা আসামীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনা হোক।
সবশেষে, এটা আবারও বলতে চাচ্ছি, আজ যারা আফগান তালেবানের উদাহরণ টানছেন, কাবুল এয়ারপোর্টের উদাহরণ দিচ্ছেন তাদের দল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় প্রায় শোচনীয় ছিল বাংলাদেশের অবস্থা। সেখান থেকে আজ বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই সাব জ্ঞানপাপীরা আজও চাচ্ছেন, কথায় কাজে স্ট্যাটাস বা ভঙ্গিমায় যদি আবারও সেই তালেবানী মতবাদ প্রতিষ্ঠা করা যায়, তা না হলে এসব নেক্কার কাজের উদাহরণ তারা টানতে পারতেন না। জঙ্গিবাদ এবং এদের মদদদাতারা নিপাত যাক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন