সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হালচাল

বসে বসে একটি ইকোনোমিকস রিলেটেড পত্রিকা পড়ছিলাম। আমার এখানে সরকার করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ফিনেন্সিয়াল ভাবে ডাবল পুটাপ করার সিধান্ত হয়তো নিতে যাচ্ছে। ১০০ বিলিয়ন ইউরো তারা হয়ত লক ডাউন জনিত অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে পুটাপ করবে। এর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতেই ৭ বিলিয়ন ইউরো খরচ করা হবে।

আসছে বাজেটে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে পৃথিবীর সব দেশই কম বেশি হয়ত ধাক্কা খাবে, এবং ধাক্কার রেষ কাটিয়ে উঠতে তাদের রিজার্ভ ঢালাও ভাবে ফিল্ড স্প্রেড করা হবে। আমাদের দেশের রিজার্ভ রেমিট্যান্স বাড়াতে সর্বোচ্চ অবদান রাখা প্রবাসীরা যারা প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা দেশে পাঠান এই করোনা ভাইরাস সিমটমের সময় তারা কতখানি নাজেহাল হয়েছেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ইবনে সিনা হাসপাতাল, ফুলকলির মত ভালো প্রতিষ্ঠানে লেখা যখন থাকে বিদেশী প্রবেশ নিষেধ তখন রিজার্ভ রেমিট্যান্স প্রশ্নে আমি কালো কালির দাগ দেখি৷ তবেও এটাও ঠিক, এই পরিস্থিতে ঢাকা এন্ট্রি আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোন ভাবেই সমর্থিত নই। তবে প্রবাসীদের দোষ খোঁজা কেউ কেউ দিব্যি প্রাতরাশ করছেন দল বেঁধে যেখানে তাদের কোন ভাইরাস আতঙ্ক ছিল না। ইউরোপের দেশ গুলো যেখানে ইকোনমিকাল গ্যাপ কাভারে ব্যস্ত তখন আমাদের কেউ কেউ লাঠি নিয়ে বেইজবল বা লং টেনিস প্রেক্টিস করছেন মানুষ মেরে, কোন কোন পলিটিশান কিডনি পাকস্থলি ধোঁয়ার মত উদ্ভট চিন্তায় আছেন, কেউ কেউ যখন নতুন পল্টন নামক হোম রাজনীতির হাঁকডাকে সরকারের চৌদ্দ পুরুষ ধুঁয়ে দিচ্ছেন তখন সেই রাতে কেউ চাল হরিলুট করে কোটিপতি হওয়ার বিশাল নেশায় ঘোরপাক খাচ্ছেন৷ এই হচ্ছে আমাদের এবং পশ্চিমাদের দুধরনের হালচাল।

বর্তমান পরিস্থিতি কাটাতে আমাদেরকে যদি বলা হয় বাংলাদেশ গভরমেন্টকে একাউন্টে এক টাকা করে দিতে তাতেও আমরা কিউ খুঁজব, অথবা দেওয়ার পর তা হরিলুট হয়ে যাবার ডাবল এক্সভিউ ও আছে'ই। মোট কথা যা বলতে চাচ্ছিলাম, করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলা করতে নিজেদের প্লান নিজেরাই করতে হবে। অসাধু সিন্ডিকেট ভেংগে দিয়ে আমাদের সাধারণ মানুষের লেবেল প্লেয়িং ইকোনমিকাল জোন নিজেরাই করতে হবে। না হলে ভাগফল যাই হোক না, ভাগশেষ হবে আসছে ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেটে সবকিছুর দাম বাড়বে৷ 'নিজেরাই করতে হবে ' এর একটি মানে আমার কাছে এরকম- কোথাও যদি আসছে মে মাস থেকে দাম বেশি রাখে সেই প্রতিষ্ঠানে যাওয়া একদম বাদ দিয়ে দিন। কয়দিন মজুদদারী আর ব্যবসাবাজী চলে হাতের রেখায় গোনা যাবে সেটা ব্যাপার না। নাইলে সামনে দ্রব্য মূল্য উর্ধ্ব গতির আরেক কাল হয়তো আসছে।

লিখেছেন- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাউল সাধক চান মিয়া এবং আমার কিছু উপলব্ধি

"রজনী হইসনা অবসান  আজ নিশিতে আসতে পারেবন্ধু কালাচাঁন।। কত নিশি পোহাইলোমনের আশা মনে রইলো রে কেন বন্ধু আসিলোনা জুড়ায়না পরান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। বাসর সাজাই আসার আশেআসবে বন্ধু নিশি শেষে দারূন পিরিতের বিষে ধরিল উজান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। মেঘে ঢাকা আঁধার রাতে কেমনে থাকি একা ঘরে সাধক চাঁনমিয়া কয় কানতে কানতে হইলাম পেরেশান আজ নিশিতে আসতে বন্দু কালাচাঁন।"    গভীর নিশিতে ধ্যান মগ্ন হয়ে কালাচাঁনের অপেক্ষা করছেন সাধক।  সাধক চান মিয়ার শিষ্য বাউল সিরাজউদ্দিনের মতে এটি একটি রাই বিচ্ছেদ। কৃষ্ণের অপেক্ষায় রাধা নিশি বা রাতকে অনুরোধ করছেন 'রাত' যেন না পোহায়  কারণ তার কালা চান যে কোন সময় আসতে পারে। শব্দগুচ্ছ গুলো থেকে সহজেই উপলব্ধি হয় সাধক নিজ দেহকে রাধা আর আত্মাকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করেছেন। দেহ আত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সাধকের সাধনা।        বাউল সাধক চান মিয়া উপরোক্ত গানটি রচনা করেছেন। নেত্রকোনা জেলার খাটপুরা গ্রামে ১৩২৫ বঙ্গাব্দে সাধক চান মিয়ার জন্ম। পুরো নাম চান্দেজ্জামান আকন্দ হলেও বা...

বাউল, বাউলতত্ব এবং কিছু কথা

একজন ভদ্র বন্ধু বরের সাথে বাউল সম্প্রদায় নিয়ে বেশ তর্ক হলো রাতে। তর্কের সূত্রপাত ছিল বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী। ভাবলাম "বাউলতত্ত্ব"র আলোকে বাউলরা ভাববাদী নাকি বস্তুবাদী তা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা আবশ্যম্ভাবী। কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব লিখে নিজের মনোভাব বোঝানোর চেষ্টা করব।  শুরুতেই শক্তিনাথ ঝাঁ এর বস্তুবাদী বাউল বই থেকে কিছু কথা লিখতে চাই; বাস্তব জগত ও জীবনকে এরা কোন আনুমানিক যুক্তি বা আলৌকিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। জৈব রাসায়নিক ব্যাখায় এরা নারীর রজঃ এবং পুরুষের বিজে জীবন ও জগত সৃষ্টিকে ব্যাখা করে এবং চার ভূতকে প্রাকৃতিক সৃষ্টি মনে করে। এভাবে মানুষে, প্রকৃতিতে তৈরি করে প্রাণ, প্রাণী। অনুমান ভিত্তিক স্বর্গ, নরক, পরলোক, পুনর্জন্মাদি প্রত্যক্ষ প্রমাণাভাবে বাউল আগ্রাহ্য করে। মানুষ ব্যাতিরিক্ত ঈশ্বরও এরা মানে না। সৃষ্টির নিয়মকে জেনে যিনি নিজেকে পরিচালনা করতে শিখেছেন- তিনিই সাঁই। সুস্থ নিরোগ দীর্ঘজীবন এবং আনন্দকে অনুভব করার বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।।  বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী এর অনেক সূক্ষ বিশ্লেষণ শক্তিনাথের বস্তুবাদী বাউল বইটির মধ্যে আলকপাত করা হয়েছে। সাধারণ সমাজে এ ধা...

ভাইবে রাধারমণ

তখন কলেজের ছাত্র। বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় রেজা স্যারের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। কলেজের প্রথম দিনই স্যারকে খুব পছন্দ। তারপর স্যারের সাথে গল্প, সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। রীতিমত ফিজিক্স, বায়োলোজি ক্লাস ফাঁকি দিলেও বাংলা ক্লাস কখনই ফাঁকি দিতাম না। খুব উপভোগ করতাম স্যারের ক্লাস। হোস্টেল সুপার হিসেবে স্যার ( ওহী আলম রেজা) আমাদের সাথেই থাকতেন। আমরা আসার প্রায় নয় মাস পর স্যার এলেন সুপার হিসেবে। প্রতিদিন রাতে খাবার পরেই স্যারের রুমে গিয়ে আড্ডা হত, গানের আসর হত। স্যারের পিসিতে প্রায়ই গান শুনতাম আমরা। একদিন হঠাৎ করেই একটি গান স্যার প্লে করলেন 'আমার বন্ধু দয়াময় তোমারে দেখিবার মনে লয়। তোমারে না দেখলে রাধার জীবন কেমনে রয় বন্ধুরে।। কদম ডালে বইসারে বন্ধু ভাঙ্গ কদম্বের আগা। শিশুকালে প্রেম শিখাইয়া যৌবনকালে দাগা রে।। তমাল ডালে বইসারে বন্ধু বাজাও রঙের বাশি। সুর শুনিয়া রাধার মন হইলো যে উদাসি রে।। ভাইবে রাধা রমন বলে মনেতে ভাবিয়া। নিভা ছিল মনের আগুন কে দিলাই জ্বালাইয়া রে।' গানের কথাগুলো বেশ ভালো লেগে গেলো। পুর গানটি শুনে বুঝলাম গানটি সাধক রাধারম...