আকাশে রূপালী চাঁদের ভরা পূর্ণিমা। টিলাঘেরা ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার পাশেই মনিপুর চা বাগানের ব্রিজে কত রাত পার হয়েছে আড্ডা হৈ হুল্লোড়ে। সারকারখানার মাঠের পাশের প্যাভিলিয়নে সন্ধ্যা ৭ অথবা ৮ টা অব্দি আড্ডা। কিছুক্ষণ পর বন্ধু কোমল নিয়ে আসলো গিটার, কল করে বন্ধু প্রদ্বীপকে বললাম দ্রুত চলে আয় গানের আসর হবে৷ বাজারের মসজিদের কোণায় দুলালের চায়ের দোকান। সেখান থেকে ঢু মেরে এসে বাগানের ব্রিজে বা মাঠের কোণায়। রাত ক'টা বাজে সেদিকে কোন খেয়াল নেই, চলছে আসর।একে একে মুহিত, জিহান, পল্লব, শিপন সাইফুল, রিজন, শুভ, ফয়সল, সমর, ছোট ভাই মাজহারুল, ফাহিম সহ অনেকেই এসে হাজির। একের পর এক বাউল গানে মাতোয়ারা সবাই।
স্মৃতি কাতর হয়ে ডুবে গিয়েছিলাম আমার শৈশব,কিশোর যৌবনের সাক্ষী সেই চা পাতার ভীড়ে। এই চা বাগানের প্রতিটি ধূলিকণার সাথে কথা বলেছি, মিশেছি। ভালো না লাগা মানেই চা বাগানে লক্কু দাদার টং দোকানে। সেখানে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা। চা বাগানের মন্দিরের সামনে থাকা টং দোকান গুলোর আড্ডা প্রতি বিকেলেই ভীষণ অনুভব করি। ঈদ বা পূজার ছুটিতে স্কুলের বন্ধু বান্ধব সবাই একসাথে বাগানের চা ফ্যাক্টরির পাশের পুকুরে দাপাদাপি। চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছে সময় গুলো।
"সকাল বেলা উঠে আমাদের দম ফালানোর সময় নাই। খাইলাম কি না খাইলাম তার দিকে চউক যায় না। আটটার মধ্যে হাজিরা না দিলে বড় বাবু আমাদের ফিরিয়্যা দেয়, সারাদিনের হাজিরার টাকা যায়। তাই দৌড়াইয়া গিয়া হাজিরা দেই আগে।" দূরে থেকে বসে বসে ক্ষোভ, বিষাদ এবং অবসাদ মাখা চা শ্রমিক গংগা মনির কথা গুলো এখনো কানে ভাসে।
চা বাগানের শ্রমিক গুলোর গায়ের ঘ্রাণ যেন আমি এখানে বসে পাই। ঘাম ঝরা নয় এদের দেহের ঘ্রাণে যেন একরকম সবুজ সজীবতার সুগন্ধ আছে। তাদের আচার ব্যবহারে অন্যরকম পবিত্রতা খুঁজে পাই আমি। বাগানের শফিক মেম্বার বাবলু বা রাজনদের চলাফেরায় অন্যরকম মার্জিত ভাব আছে। বিদ্যুৎ গ্যাস সভ্যতার সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাবলু মাদ্রাজি যখন প্রথম বিভাগে বি.এ পাশ করে নিয়মিত ডায়েরি লিখে নিজের মনের আকুতি গুলো লেপন করে যায় অপ্রকাশিত পৃষ্ঠায় তখন ১৩ হাজার মাইল আমি চা বাগানে স্মৃতি খুঁজে বেড়াব এটাই স্বাভাবিক।
আজ এতটুকুই.....
লিখেছেন- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক
স্মৃতি কাতর হয়ে ডুবে গিয়েছিলাম আমার শৈশব,কিশোর যৌবনের সাক্ষী সেই চা পাতার ভীড়ে। এই চা বাগানের প্রতিটি ধূলিকণার সাথে কথা বলেছি, মিশেছি। ভালো না লাগা মানেই চা বাগানে লক্কু দাদার টং দোকানে। সেখানে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা। চা বাগানের মন্দিরের সামনে থাকা টং দোকান গুলোর আড্ডা প্রতি বিকেলেই ভীষণ অনুভব করি। ঈদ বা পূজার ছুটিতে স্কুলের বন্ধু বান্ধব সবাই একসাথে বাগানের চা ফ্যাক্টরির পাশের পুকুরে দাপাদাপি। চোখের সামনে ভেসে যাচ্ছে সময় গুলো।
"সকাল বেলা উঠে আমাদের দম ফালানোর সময় নাই। খাইলাম কি না খাইলাম তার দিকে চউক যায় না। আটটার মধ্যে হাজিরা না দিলে বড় বাবু আমাদের ফিরিয়্যা দেয়, সারাদিনের হাজিরার টাকা যায়। তাই দৌড়াইয়া গিয়া হাজিরা দেই আগে।" দূরে থেকে বসে বসে ক্ষোভ, বিষাদ এবং অবসাদ মাখা চা শ্রমিক গংগা মনির কথা গুলো এখনো কানে ভাসে।
চা বাগানের শ্রমিক গুলোর গায়ের ঘ্রাণ যেন আমি এখানে বসে পাই। ঘাম ঝরা নয় এদের দেহের ঘ্রাণে যেন একরকম সবুজ সজীবতার সুগন্ধ আছে। তাদের আচার ব্যবহারে অন্যরকম পবিত্রতা খুঁজে পাই আমি। বাগানের শফিক মেম্বার বাবলু বা রাজনদের চলাফেরায় অন্যরকম মার্জিত ভাব আছে। বিদ্যুৎ গ্যাস সভ্যতার সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাবলু মাদ্রাজি যখন প্রথম বিভাগে বি.এ পাশ করে নিয়মিত ডায়েরি লিখে নিজের মনের আকুতি গুলো লেপন করে যায় অপ্রকাশিত পৃষ্ঠায় তখন ১৩ হাজার মাইল আমি চা বাগানে স্মৃতি খুঁজে বেড়াব এটাই স্বাভাবিক।
আজ এতটুকুই.....
লিখেছেন- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক
Our loving place & our heart NGFF
উত্তরমুছুনThank You for this nice writing.
ভালো লাগলো
উত্তরমুছুন