সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন এবং সাংবাদিক নির্যাতন

কথা বলছিলাম একজন সাংবাদিকের সাথে। ২০১৫ সালের কথা, যিনি সিলেট বিভাগের জাতীয় এবং স্থানীয় অনলাইন জার্নাল এবং প্রিন্ট পত্রিকার প্রতিনিধি। কথার প্রসঙ্গে চলে আসলো একটি মামলার প্রসঙ্গ। তিনি জানালেন, ২০১৫ সালে তিনি পরিবেশ নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এই সংবাদ প্রকাশ করার পর তার বিরুদ্ধে সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করার অভিযোগে মিথ্যা মামলা হয়েছিল। রাতের আঁধারে সাদা পোষাকের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থানায় তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাকে অহেতুক হেরেসমেন্ট করা হয়েছিল সেই দিন রাতে থানায়। এখনো তিনি সেই মামলার কারণে কোর্টে রেগুগার হাজিরা দিতে হচ্ছে। এই হচ্ছে আমাদের স্থানীয় সাংবাদিকের জীবন। ৬ এপ্রিল ২০১৩ সালের কথা মনে আছে!  ঢাকায় পেশাগত কর্তব্যে নিয়োজিত নারী সাংবাদিকদের ওপর হেফাজতে ইসলামের সমর্থকদের হামলার কথা আরও একবার স্মরণ করলাম। এ হামলা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং সাংবাদিকদের তথ্য-অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ।

বাংলাদেশে ইদানিং ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের কালো থাবায় জর্জরিত সাংবাদিক মহল। শুধু সাংবাদিক নন, লেখক, ব্লগার, আলোকচিত্রী কেউ নিরাপদ নন। ইদানিং কোভিড ১৯ কালীন অবস্থায় বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বব্যাপী নিপীড়নের শিকার হয়েছেন সাংবাদিক এবং ব্লগাররা। বস্তুনিষ্ঠতা তুলে ধরেই তাদের দিন গুণতে হচ্ছে জেলের অন্ধকারে বা পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে নিজ ভূমি বা এলাকা ছেড়ে অনত্র। সর্বশেষ ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট নামক কালো আইনে জেলে অন্ধকারের প্রহর গুণতে হচ্ছে আমার হবিগঞ্জ এর প্রকাশক এবং সম্পাদক , ব্লগার সুশান্ত দাশ গুপ্তকে।

এমন কোন বছর নেই যে বাংলাদেশ সাংবাদিক নির্যাতন হয় নি। সাংবাদিক এবং ব্লগার খুন গুম ধড়পাকড় যেন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। এই নির্যাতনের মধ্যে আরেক বিষফোঁড়া হয়ে দাড়িয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট। ২০০৬ সালের পাশ হওয়া তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০১৩ সালে আরও কড়াকড়ি করে বিল পাশ হয়। ৫৭ ধারা নামক কালো আইনে একের পর এক মামলা বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে লেখক সাংবাদিক প্রকাশক হয়রানি। একটি ঘটনা শেয়ার করি, একটি বাস্তব ঘটনা তুলে ধরি। শিশু নির্যাতন নিয়ে একটি রিপোর্ট করেছিলেন একজন স্থানীয় সাংবাদিক। একটি স্বনাম ধন্য অনলাইন গণমাধ্যমে সেটি প্রকাশ হবার তাকে এলাকা ছাড়া করা হলো। কেন করা হলো? অনেক প্রশ্ন! কারণ স্থানীয় সাংসদের ছত্রছায়ার লোকছিলেন তিনি। হুমকি দেওয়া হলো তাকে, দফায় দফায় প্রাণনাশের চেষ্টা। এত কিছুর পরও তিনি গণমাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছিলেন। শেষ রেহাই হলো না তার। অন্য একটি নিউজের জেরে তাকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মিথ্যা কালো মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হলো। দফায় দফায় তার বাড়িতে তল্লাশী।

 গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা প্যারিস ভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস নামে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্য এবং ভলান্টিয়ার হিসেবে আমি কাজ করি। এই সংগঠনের  তথ্য অনুসারে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা র‍্যাংকিং এ ২০১৮ সালে ১৮০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এর আগের বছরের তুলনায় চার ধাপ নেমে ১৫০এ দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালে আরেক ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫১ তম।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর রুনির কথা মনে আছে।  নৃশংস সেই হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘন্টায় বিচার হবে বলেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন৷ আজ অব্দি বিচার হয়েছে হয়নি।  সাগর রুনি হত্যাকাণ্ড বাদ দিলাম আসি বর্তমান পরিস্থিতি কোভিড ১৯ এর খবর নিয়ে৷ এখন পর্যন্ত স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে প্রায় ৪২ জন সাংবাদিক হামলা এবং হেনস্তার শিকার হয়েছেন।  বছর-খানেক আগেই ঢাকার দুটি নামকরা গণমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণ সাময়িকভাবে বন্ধ হবার ঘটনা ঘটে। এর একটি বিডি নিউজ টুয়েন্টিফোর, অন্যটি প্রথম আলো। এরও কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে একজন সংবাদকর্মী রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হবার দু'মাস পর তাকে পাওয়া যায় নারায়ণগঞ্জে। কিন্তু এসব ঘটনা কার নির্দেশে কিংবা কিভাবে ঘটছে, তা কখনোই স্পষ্ট হয়না।

এবার আসি কালো আইন নামক ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট এর কিছু ধারা নিয়ে। এই আইনে শাস্তির বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে --- ‘এই আইনের আওতায় কেউ যদি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনও ধরনের প্রপাগান্ডা চালান, তাহলে ১৪ বছরের জেল ও এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ২৮ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি ধর্মীয় বোধ ও অনুভূতিতে আঘাত করে,  তাহলে  ১০ বছরের জেল ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

নতুন আইনের ২৯ ধারায় বলা হয়েছে, মানহানিকর কোনও তথ্য দিলে তিন বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া, ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কেউ যদি বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কোনও ধরনের তথ্য উপাত্ত, যেকোনও ধরনের ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি দিয়ে গোপনে রেকর্ড করে, তাহলে সেটা গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হবে এবং এ অপরাধে ১৪ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডর বিধান রাখা হয়েছে।

আইনে বলা হযেছে, কেউ যদি বেআইনিভাবে কারও ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে, তাহলে তাকে সাত বছরের জেল ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। বেআইনিভাবে অন্য সাইটে প্রবেশ করার পর যদি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হন, তবে ১৪ বছরের জেল ও এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডর বিধান রাখা হয়েছে।। আবার কেউ যদি বেআইনিভাবে কারও ডিভাইসে প্রবেশ করে তাহলে এক বছরের জেল ও তিন লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডর বিধান রাখা হয়েছে। কেউ যদি কারও ডিভাইসে প্রবেশে সহায়তা করে, তাহলে তিন বছরের জেল ও তিন লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৭ ধারায় বলা হয়েছে, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে কেউ যদি জনগণকে ভয়ভীতি দেখায় এবং রাষ্ট্রের ক্ষতি করে, তাহলে ১৪ বছরের জেল ও এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল মাধ্যমে আক্রমণাত্মক ভয়ভীতি দেখায়, তাহলে তাকে তিন বছরের জেল ও তিন লাখ টাকা জরিমানাসহ উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ৩০ ধারায় বলা হয়েছে, না জানিয়ে কেউ যদি কোনও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার করে ব্যাংক-বীমায় ই-ট্রানজেকশন করে, তাহলে পাঁচ বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ৩১ ধারায় বলা হয়েছে, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করলে সাত বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মূলত এই প্রতিটি আইন ব্যবহার করা হচ্ছে সাংবাদিক, লেখক ব্লগার আলোকচিত্রী কার্টুনিস্ট অনলাইন এক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে। অহেতুক মিথ্যা মালায় বাংলাদেশের শত শত সাংবাদিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

যাইহোক যা বলছিলাম, ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট নামক কালো আইন বন্ধ করার দাবী আমরা অনেক দিন থেকেই করে আসছি। দ্রুত এই বাতিল হোক এটাই আমার জোর দাবী। মত প্রকাশের স্বাধীনতা মুক্ত হোক। অগণতান্ত্রিক, রুদ্ধতা নিপাত যাক।

লেখক- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক, ব্লগার

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাউল সাধক চান মিয়া এবং আমার কিছু উপলব্ধি

"রজনী হইসনা অবসান  আজ নিশিতে আসতে পারেবন্ধু কালাচাঁন।। কত নিশি পোহাইলোমনের আশা মনে রইলো রে কেন বন্ধু আসিলোনা জুড়ায়না পরান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। বাসর সাজাই আসার আশেআসবে বন্ধু নিশি শেষে দারূন পিরিতের বিষে ধরিল উজান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। মেঘে ঢাকা আঁধার রাতে কেমনে থাকি একা ঘরে সাধক চাঁনমিয়া কয় কানতে কানতে হইলাম পেরেশান আজ নিশিতে আসতে বন্দু কালাচাঁন।"    গভীর নিশিতে ধ্যান মগ্ন হয়ে কালাচাঁনের অপেক্ষা করছেন সাধক।  সাধক চান মিয়ার শিষ্য বাউল সিরাজউদ্দিনের মতে এটি একটি রাই বিচ্ছেদ। কৃষ্ণের অপেক্ষায় রাধা নিশি বা রাতকে অনুরোধ করছেন 'রাত' যেন না পোহায়  কারণ তার কালা চান যে কোন সময় আসতে পারে। শব্দগুচ্ছ গুলো থেকে সহজেই উপলব্ধি হয় সাধক নিজ দেহকে রাধা আর আত্মাকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করেছেন। দেহ আত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সাধকের সাধনা।        বাউল সাধক চান মিয়া উপরোক্ত গানটি রচনা করেছেন। নেত্রকোনা জেলার খাটপুরা গ্রামে ১৩২৫ বঙ্গাব্দে সাধক চান মিয়ার জন্ম। পুরো নাম চান্দেজ্জামান আকন্দ হলেও বা...

বাউল, বাউলতত্ব এবং কিছু কথা

একজন ভদ্র বন্ধু বরের সাথে বাউল সম্প্রদায় নিয়ে বেশ তর্ক হলো রাতে। তর্কের সূত্রপাত ছিল বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী। ভাবলাম "বাউলতত্ত্ব"র আলোকে বাউলরা ভাববাদী নাকি বস্তুবাদী তা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা আবশ্যম্ভাবী। কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব লিখে নিজের মনোভাব বোঝানোর চেষ্টা করব।  শুরুতেই শক্তিনাথ ঝাঁ এর বস্তুবাদী বাউল বই থেকে কিছু কথা লিখতে চাই; বাস্তব জগত ও জীবনকে এরা কোন আনুমানিক যুক্তি বা আলৌকিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। জৈব রাসায়নিক ব্যাখায় এরা নারীর রজঃ এবং পুরুষের বিজে জীবন ও জগত সৃষ্টিকে ব্যাখা করে এবং চার ভূতকে প্রাকৃতিক সৃষ্টি মনে করে। এভাবে মানুষে, প্রকৃতিতে তৈরি করে প্রাণ, প্রাণী। অনুমান ভিত্তিক স্বর্গ, নরক, পরলোক, পুনর্জন্মাদি প্রত্যক্ষ প্রমাণাভাবে বাউল আগ্রাহ্য করে। মানুষ ব্যাতিরিক্ত ঈশ্বরও এরা মানে না। সৃষ্টির নিয়মকে জেনে যিনি নিজেকে পরিচালনা করতে শিখেছেন- তিনিই সাঁই। সুস্থ নিরোগ দীর্ঘজীবন এবং আনন্দকে অনুভব করার বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।।  বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী এর অনেক সূক্ষ বিশ্লেষণ শক্তিনাথের বস্তুবাদী বাউল বইটির মধ্যে আলকপাত করা হয়েছে। সাধারণ সমাজে এ ধা...

ভাইবে রাধারমণ

তখন কলেজের ছাত্র। বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় রেজা স্যারের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। কলেজের প্রথম দিনই স্যারকে খুব পছন্দ। তারপর স্যারের সাথে গল্প, সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। রীতিমত ফিজিক্স, বায়োলোজি ক্লাস ফাঁকি দিলেও বাংলা ক্লাস কখনই ফাঁকি দিতাম না। খুব উপভোগ করতাম স্যারের ক্লাস। হোস্টেল সুপার হিসেবে স্যার ( ওহী আলম রেজা) আমাদের সাথেই থাকতেন। আমরা আসার প্রায় নয় মাস পর স্যার এলেন সুপার হিসেবে। প্রতিদিন রাতে খাবার পরেই স্যারের রুমে গিয়ে আড্ডা হত, গানের আসর হত। স্যারের পিসিতে প্রায়ই গান শুনতাম আমরা। একদিন হঠাৎ করেই একটি গান স্যার প্লে করলেন 'আমার বন্ধু দয়াময় তোমারে দেখিবার মনে লয়। তোমারে না দেখলে রাধার জীবন কেমনে রয় বন্ধুরে।। কদম ডালে বইসারে বন্ধু ভাঙ্গ কদম্বের আগা। শিশুকালে প্রেম শিখাইয়া যৌবনকালে দাগা রে।। তমাল ডালে বইসারে বন্ধু বাজাও রঙের বাশি। সুর শুনিয়া রাধার মন হইলো যে উদাসি রে।। ভাইবে রাধা রমন বলে মনেতে ভাবিয়া। নিভা ছিল মনের আগুন কে দিলাই জ্বালাইয়া রে।' গানের কথাগুলো বেশ ভালো লেগে গেলো। পুর গানটি শুনে বুঝলাম গানটি সাধক রাধারম...