সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সিস্টেম ঠিক নেই!

গাড়ি সিস্টেম, চালক সিস্টেম, রোড সিস্টেম,কন্ট্রোল সিস্টেম একটাও আমাদের ঠিক নেই। আমাদের পাবলিক যারা রোডে চলাচল করি, যেমন আমি, আমরাও ঠিক নেই। গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে মনে করি আমরা আকাশে উড়ছি। ঢাকা সিলেট চিটাগাং সহ সদর এলাকা গুলোতে আমরা যারা চলাফেরা করি কয়জন আইন মেনেছি। ছোট একটা ঘটনা বলি। ২০১৭ সাল, ঢাকা বিমানবন্দর রেল স্টেশন এলাকায় বেশ কয়েকটি ওভার ব্রিজ আছে। একদিন আমি আর বাবা ট্রেন থেকে পারাপার হচ্ছিলাম। ভোর রাত৷ বাবা বললেন একা একা যাবি ঐ দিকে হাইজ্যাকার না থাকে। আমি বললাম,  চলো না বাপ বেটা আছি না ধরলে একসাথে পিটাবো। বাবা বললেন, খালি হাইজ্যাকার না,  দেখবি অই খানে মানুষ দাঁড়িয়ে পিশি করতেছে দেখবি। ঠিক ঠিক গিয়ে দেখি এক লাইনে এই ভোর রাতে তিনজন চিপা দিয়ে পিলারের পাশে পিশি করতেছে এই হলো আমাদের আইন মানা, আর মেনে চলা।

সিলেটে বন্দর বাজারে একটা ওভার ব্রিজ আছে। কিছুদিন আগে করা হয়েছে। আমাদের অনেকেই আছি একদিন উঠে দেখি নাই জিনিস টা কি। অটা দিয়ে রোড পার হওয়াত দূরের কথা। মাঝে মাঝে ফুটেজ নিতে আমাদের ফটো সাংবাদিক যারা আছি তাদের ই কাজে লাগে এটা, ফুটেজ নিতে৷ এই সার।

আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া প্রতিষ্ঠান দালাল হুকারে ভর্তি। টাকা হইলেই পাওয়া যায় কাগজ। এসব মন্ত্রণালয় একটুও দেখে না। কত পোলাপান স্টিয়ারিং ধরতে পারে না, কিন্তু তাদের কাগজ আছে। কিভাবে কি হয় কিছুই বোঝি না।

আসলে আমাদের ড্রাইভিং সিস্টেম মেইনটেইনেস খুবি বাজে৷ না ড্রাইভাররা আইন মানে, না মালিক সমিতি না আমরা। কেউ না। হুদাই আমরা চিল্লাই। এই যেমন আমি বয়ান দিচ্ছি এখানে কিন্তু কারের ড্রাইভ সিটে বসে ভু করে টান দিয়ে দিসি। এই স্ট্যাটাসের কথা মনেই থাকবে না। আসলে আমরাই ঠিক নাই, আর ড্রাউভারদের কথা কি বলব! নেশা করে জাফলং পাথর কোয়ারি থেকে ট্রাক টান দেবে এসে উল্টাবে জৈন্তাপুর বা মাধবপুর। আর বেণী মাধব, আর মাধব সাহা চাকার তলে। এই হলে অবস্থা।

দুই দিনের স্ট্রাইক ডেকেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। একে বারেই অমূলক  এবং পাব্লিক ভোগান্তি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।
শ্রমিকদের অযৌক্তিক এই ধর্মঘট কোন ভাবেই সমর্থিত নয়। তবে যে চালক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন সেই ঘটনার তদন্ত বিচার এবং ভর্তুকি চাই।
 
প্রতিটি জেলা সদর রুটে সরকারী বাস চাই। ফিটনেস বিহীন গাড়ি, ফেন্সিডিলখোর চালক চিরতরে ব্যান করে দেওয়া হোক। রোড ট্রান্সপোর্টে যারা দুর্নীতি করছে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হোক।

লিখেছেন- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক, অনলাইন এক্টিভিস্ট

 

  

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বাউল সাধক চান মিয়া এবং আমার কিছু উপলব্ধি

"রজনী হইসনা অবসান  আজ নিশিতে আসতে পারেবন্ধু কালাচাঁন।। কত নিশি পোহাইলোমনের আশা মনে রইলো রে কেন বন্ধু আসিলোনা জুড়ায়না পরান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। বাসর সাজাই আসার আশেআসবে বন্ধু নিশি শেষে দারূন পিরিতের বিষে ধরিল উজান। আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।। মেঘে ঢাকা আঁধার রাতে কেমনে থাকি একা ঘরে সাধক চাঁনমিয়া কয় কানতে কানতে হইলাম পেরেশান আজ নিশিতে আসতে বন্দু কালাচাঁন।"    গভীর নিশিতে ধ্যান মগ্ন হয়ে কালাচাঁনের অপেক্ষা করছেন সাধক।  সাধক চান মিয়ার শিষ্য বাউল সিরাজউদ্দিনের মতে এটি একটি রাই বিচ্ছেদ। কৃষ্ণের অপেক্ষায় রাধা নিশি বা রাতকে অনুরোধ করছেন 'রাত' যেন না পোহায়  কারণ তার কালা চান যে কোন সময় আসতে পারে। শব্দগুচ্ছ গুলো থেকে সহজেই উপলব্ধি হয় সাধক নিজ দেহকে রাধা আর আত্মাকে কৃষ্ণের সাথে তুলনা করেছেন। দেহ আত্মার মিলন ঘটানোই ছিল সাধকের সাধনা।        বাউল সাধক চান মিয়া উপরোক্ত গানটি রচনা করেছেন। নেত্রকোনা জেলার খাটপুরা গ্রামে ১৩২৫ বঙ্গাব্দে সাধক চান মিয়ার জন্ম। পুরো নাম চান্দেজ্জামান আকন্দ হলেও বা...

বাউল, বাউলতত্ব এবং কিছু কথা

একজন ভদ্র বন্ধু বরের সাথে বাউল সম্প্রদায় নিয়ে বেশ তর্ক হলো রাতে। তর্কের সূত্রপাত ছিল বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী। ভাবলাম "বাউলতত্ত্ব"র আলোকে বাউলরা ভাববাদী নাকি বস্তুবাদী তা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা আবশ্যম্ভাবী। কয়েকটি ধারাবাহিক পর্ব লিখে নিজের মনোভাব বোঝানোর চেষ্টা করব।  শুরুতেই শক্তিনাথ ঝাঁ এর বস্তুবাদী বাউল বই থেকে কিছু কথা লিখতে চাই; বাস্তব জগত ও জীবনকে এরা কোন আনুমানিক যুক্তি বা আলৌকিক যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। জৈব রাসায়নিক ব্যাখায় এরা নারীর রজঃ এবং পুরুষের বিজে জীবন ও জগত সৃষ্টিকে ব্যাখা করে এবং চার ভূতকে প্রাকৃতিক সৃষ্টি মনে করে। এভাবে মানুষে, প্রকৃতিতে তৈরি করে প্রাণ, প্রাণী। অনুমান ভিত্তিক স্বর্গ, নরক, পরলোক, পুনর্জন্মাদি প্রত্যক্ষ প্রমাণাভাবে বাউল আগ্রাহ্য করে। মানুষ ব্যাতিরিক্ত ঈশ্বরও এরা মানে না। সৃষ্টির নিয়মকে জেনে যিনি নিজেকে পরিচালনা করতে শিখেছেন- তিনিই সাঁই। সুস্থ নিরোগ দীর্ঘজীবন এবং আনন্দকে অনুভব করার বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।।  বাউলরা ভাববাদী না বস্তুবাদী এর অনেক সূক্ষ বিশ্লেষণ শক্তিনাথের বস্তুবাদী বাউল বইটির মধ্যে আলকপাত করা হয়েছে। সাধারণ সমাজে এ ধা...

ভাইবে রাধারমণ

তখন কলেজের ছাত্র। বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্রদ্ধেয় রেজা স্যারের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক। কলেজের প্রথম দিনই স্যারকে খুব পছন্দ। তারপর স্যারের সাথে গল্প, সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা। রীতিমত ফিজিক্স, বায়োলোজি ক্লাস ফাঁকি দিলেও বাংলা ক্লাস কখনই ফাঁকি দিতাম না। খুব উপভোগ করতাম স্যারের ক্লাস। হোস্টেল সুপার হিসেবে স্যার ( ওহী আলম রেজা) আমাদের সাথেই থাকতেন। আমরা আসার প্রায় নয় মাস পর স্যার এলেন সুপার হিসেবে। প্রতিদিন রাতে খাবার পরেই স্যারের রুমে গিয়ে আড্ডা হত, গানের আসর হত। স্যারের পিসিতে প্রায়ই গান শুনতাম আমরা। একদিন হঠাৎ করেই একটি গান স্যার প্লে করলেন 'আমার বন্ধু দয়াময় তোমারে দেখিবার মনে লয়। তোমারে না দেখলে রাধার জীবন কেমনে রয় বন্ধুরে।। কদম ডালে বইসারে বন্ধু ভাঙ্গ কদম্বের আগা। শিশুকালে প্রেম শিখাইয়া যৌবনকালে দাগা রে।। তমাল ডালে বইসারে বন্ধু বাজাও রঙের বাশি। সুর শুনিয়া রাধার মন হইলো যে উদাসি রে।। ভাইবে রাধা রমন বলে মনেতে ভাবিয়া। নিভা ছিল মনের আগুন কে দিলাই জ্বালাইয়া রে।' গানের কথাগুলো বেশ ভালো লেগে গেলো। পুর গানটি শুনে বুঝলাম গানটি সাধক রাধারম...