পৃথিবী এক ভয়াবহ ক্রান্তিকাল পার করছে। করোনা নামক ভাইরাসের কারণে পৃথিবী আজ বিপর্যয়ের মুখে। পুরো বিশ্বই আজ লক ডাউন৷ এক সময় আমি মনে করতাম লক ডাউন শব্দটা বিমান বা ফ্লাইট উঠা নামার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। কিন্তু এই শব্দটা যে পৃথিবী স্থবির করে দেবে তা কে জানতো!।
করোনা ভাইরাসের বৈজ্ঞানিক ব্যাপার বা প্যাটান নিয়ে আলোচনা করছিনা৷ আমি গবেষক নই। আমি থমকে যাওয়া জীবনের কথা বলছি। একজন ইউরোপবাসী হিসেবে বলছি পুরো পৃথিবী যে কি পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখে তা বলে শেষ করা যাবেনা৷ নরমাল একটি হিসেবে বলছি, এই দিনে আমার এখানে প্রায় কম হলেও মিলিয়ন খানেক অর্থ লোকসানের মুখে। ইউরোপের ধনী দেশ গুলোতে বলা হচ্ছে লোকশান এড়াতে ইনভেস্ট করা হবে কিন্তু আমার গরিব দেশ বাংলাদেশে একটি মহামারি হলে কি হবে? পোলিও রোগের কথা মনে আছে। ছোট বেলা দেখতাম কোন বাসায় বা বাড়িতে কোন বাচ্চা হেন্ডিকাফ বা ডিজেবল হলে মানুষ দূরে থাকতো। ভাবতো ছোঁয়াচে। কিন্তু এই বিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আমি বা আমরা কতখানি সচেতন! বেশ কিছু ছবি আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেখানে দেখলাম ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ, পতেঙ্গা সি বিচে মানুষের ঢল, পর্যটনের সেক্টরে যেন মহা উৎসব৷ ৩১ মার্চ পর্যন্ত করোনার প্রভাবে স্কুল কলেজ সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ হবার আগে জনসাধারণের একটি দাবী ছিল যে কেন স্কুল কলেজ বন্ধ করা হলোনা! কিন্তু যখন'ই বন্ধ হলো তখনি যেমন অঘোষিত উৎসব শুরু হয়ে গেলো। আসলে বোঝাতে যা চাচ্ছি, দায়বদ্ধতা সরকার বা দিকপালদের উপর চাপিয়ে দিয়ে আমরা কতখানি সচেতন। প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রশ্নবিদ্ধ থেকেই যাই আমরা। আমার এখানের পরিস্থির কথা যদি বলি, তবে জরুরি কাজ ছাড়া বের হওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। বেরুলেই গুণতে হবে জরিমানা সেটা ৩৮ ইউরো থেকে ১৩৫ ইউরো পর্যন্ত৷ স্বাভাবিক মনে আমি একটি ব্যাপার চিন্তা করছি এটা যদি বাংলাদেশে হতো তাহলে আমি বা আমরা দায় চাপিয়ে দিতাম সরকারের উপর যে লুটপাটের নতুন পথ তৈরি করা হচ্ছে। আবার এটাও চরম সত্য যদি এমন আইন হয়েই যেত বাংলাদেশে তবে সেই টাকা হাওয়ায় উড়ে চলে যেতো বাসার ওয়ারড্রপে বা বালিশের নিচে। দুটাই সত্য এবং দায়িত্ববোধের নির্মম চিত্র।
যাই হোক। যা বলতে চাচ্ছিলাম আমরা আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন। একটি মহামারি কাভার করতে নিজ দায়বদ্ধতা থেকে কাভার করতে হবে সবাইকে মিলে। নিজে থাকতে হবে সুস্থ, সমাজকে বোঝাতে হবে সুস্থতার স্বরূপ। বাংলাদেশে একবার এ ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে সেটা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে যে কারণে সবাইকে সচেতন হবারও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া এই মুহূর্তে অত্যাবশ্যকীয় না হলে বিদেশ ভ্রমণ এবং বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদেরও দেশে না আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে সাধারণ মানুষকে কোলাকুলি এবং করমর্দন না করারও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এখানে আমার স্পষ্ট ভাষ্য হচ্ছে, ইউরোপীয় দেশ থেকে কোন ভাবেই ঢাকা এন্ট্রি উচিৎ হবেনা। এই 'উচিৎ না' বিষয়টা আইন যুক্তি বা পেশী শক্তির ব্যাপার নয়। নিজে উপলব্ধির ব্যাপার, মানবিক এবং সচেতনার ব্যাপার। প্লেগ কলেরা বার্ডফ্লু সোয়াইন ফ্লু এর মত মহামারির পাদুর্ভাব আমরা যদি কাটিয়ে উঠতে পারি, তবে এই বর্তমান সমস্যা কেন পারবনা, অবশ্যই পারব, পারতেই হবে।
ওয়ার্ল্ডমিটারে বাংলাদেশ সময় বুধবারের প্রথম প্রহরের তথ্য অনুযায়ী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯৪,৭৩৫ জন, যার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮১,০৮০ এবং মারা গেছেন ৭,৮৯৬ জন। মহামারি নিপাত যাক, মানুষ সুস্থ থাকুক। করোনা ভাইরাস রোধে আমরা সচেতন হই।
লেখক- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক, অনলাইন এক্টিভিস্ট
করোনা ভাইরাসের বৈজ্ঞানিক ব্যাপার বা প্যাটান নিয়ে আলোচনা করছিনা৷ আমি গবেষক নই। আমি থমকে যাওয়া জীবনের কথা বলছি। একজন ইউরোপবাসী হিসেবে বলছি পুরো পৃথিবী যে কি পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখে তা বলে শেষ করা যাবেনা৷ নরমাল একটি হিসেবে বলছি, এই দিনে আমার এখানে প্রায় কম হলেও মিলিয়ন খানেক অর্থ লোকসানের মুখে। ইউরোপের ধনী দেশ গুলোতে বলা হচ্ছে লোকশান এড়াতে ইনভেস্ট করা হবে কিন্তু আমার গরিব দেশ বাংলাদেশে একটি মহামারি হলে কি হবে? পোলিও রোগের কথা মনে আছে। ছোট বেলা দেখতাম কোন বাসায় বা বাড়িতে কোন বাচ্চা হেন্ডিকাফ বা ডিজেবল হলে মানুষ দূরে থাকতো। ভাবতো ছোঁয়াচে। কিন্তু এই বিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আমি বা আমরা কতখানি সচেতন! বেশ কিছু ছবি আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেখানে দেখলাম ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ, পতেঙ্গা সি বিচে মানুষের ঢল, পর্যটনের সেক্টরে যেন মহা উৎসব৷ ৩১ মার্চ পর্যন্ত করোনার প্রভাবে স্কুল কলেজ সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ হবার আগে জনসাধারণের একটি দাবী ছিল যে কেন স্কুল কলেজ বন্ধ করা হলোনা! কিন্তু যখন'ই বন্ধ হলো তখনি যেমন অঘোষিত উৎসব শুরু হয়ে গেলো। আসলে বোঝাতে যা চাচ্ছি, দায়বদ্ধতা সরকার বা দিকপালদের উপর চাপিয়ে দিয়ে আমরা কতখানি সচেতন। প্রশ্ন রয়েই যায়, প্রশ্নবিদ্ধ থেকেই যাই আমরা। আমার এখানের পরিস্থির কথা যদি বলি, তবে জরুরি কাজ ছাড়া বের হওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। বেরুলেই গুণতে হবে জরিমানা সেটা ৩৮ ইউরো থেকে ১৩৫ ইউরো পর্যন্ত৷ স্বাভাবিক মনে আমি একটি ব্যাপার চিন্তা করছি এটা যদি বাংলাদেশে হতো তাহলে আমি বা আমরা দায় চাপিয়ে দিতাম সরকারের উপর যে লুটপাটের নতুন পথ তৈরি করা হচ্ছে। আবার এটাও চরম সত্য যদি এমন আইন হয়েই যেত বাংলাদেশে তবে সেই টাকা হাওয়ায় উড়ে চলে যেতো বাসার ওয়ারড্রপে বা বালিশের নিচে। দুটাই সত্য এবং দায়িত্ববোধের নির্মম চিত্র।
যাই হোক। যা বলতে চাচ্ছিলাম আমরা আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন। একটি মহামারি কাভার করতে নিজ দায়বদ্ধতা থেকে কাভার করতে হবে সবাইকে মিলে। নিজে থাকতে হবে সুস্থ, সমাজকে বোঝাতে হবে সুস্থতার স্বরূপ। বাংলাদেশে একবার এ ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে সেটা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে যে কারণে সবাইকে সচেতন হবারও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া এই মুহূর্তে অত্যাবশ্যকীয় না হলে বিদেশ ভ্রমণ এবং বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদেরও দেশে না আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে সাধারণ মানুষকে কোলাকুলি এবং করমর্দন না করারও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এখানে আমার স্পষ্ট ভাষ্য হচ্ছে, ইউরোপীয় দেশ থেকে কোন ভাবেই ঢাকা এন্ট্রি উচিৎ হবেনা। এই 'উচিৎ না' বিষয়টা আইন যুক্তি বা পেশী শক্তির ব্যাপার নয়। নিজে উপলব্ধির ব্যাপার, মানবিক এবং সচেতনার ব্যাপার। প্লেগ কলেরা বার্ডফ্লু সোয়াইন ফ্লু এর মত মহামারির পাদুর্ভাব আমরা যদি কাটিয়ে উঠতে পারি, তবে এই বর্তমান সমস্যা কেন পারবনা, অবশ্যই পারব, পারতেই হবে।
ওয়ার্ল্ডমিটারে বাংলাদেশ সময় বুধবারের প্রথম প্রহরের তথ্য অনুযায়ী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯৪,৭৩৫ জন, যার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮১,০৮০ এবং মারা গেছেন ৭,৮৯৬ জন। মহামারি নিপাত যাক, মানুষ সুস্থ থাকুক। করোনা ভাইরাস রোধে আমরা সচেতন হই।
লেখক- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক, অনলাইন এক্টিভিস্ট
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন