সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2020 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মা'য়ের মুখে শোনা মুক্তিযুদ্ধের গল্প

মা নিজের হাত তুলে ভাত খাইয়ে দেবেন এই ব্যাপারটার মত সুখকর এবং পবিত্র মুহূর্ত অন্য কোন কিছুই হতে পারেনা। কিন্ডার গার্টেন স্কুলে প্লে বা নার্সারিতে পড়ি তখন ড্রইং বা ছবি আঁকতে আঁকতে মা গল্প শুনাতেন। আমার মা একজন শিক্ষিকা, সারাদিন স্কুল শেষ করে এসে আমাকে দেখাশোনা করা বেশ কষ্টকর ছিল। কিন্তু সন্ধ্যার পর পড়তে বসলে মা গল্প শুনাতেন। মায়ের মুখে শোনা একটি গল্প মনে পড়ে গেলো--  মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার মায়ের বয়স তিন বছর। আমার নানীর কোলে থাকা ফুটফুটে শিশু তিনি। সবকিছু উনার মনে নেই। কিন্তু যা মনে ছিলো তাই গল্প করতেন। আমার নানা নজমুল ইসলাম চৌধুরী (সম্পত্তি মিয়া) মুক্তিযুদ্ধে চলে যাবার পর নানার বাড়িকে অনেক ঝুট ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। আমার নানা ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার, মাইজগাঁও ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের বাসিন্দা। ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার সাবেক স্টাফ।  যুদ্ধ করেছেন হাকালুকি হাওর বেষ্টিত বড়লেখা বিয়ানীবাজার সীমান্ত এলাকায়। জুলাই এর শেষ বা আগস্ট মাসের শুরুতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ তুঙ্গে। ফেঞ্চুগঞ্জ স্থানীয় মেলেটারি ক্যাম্পে রাজাকাররা খবর পৌছে দিল জুম্মাটিল্লার সম্পত্তি (নানার নাম) মুক্তিবাহিনীতে চলে গেসেন। আতঙ্কগ...

রিতা দেওয়ান, থামানো বেহালার উদাহরণ

লিখেছেনঃ চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক  রিতা দেওয়ান, একজন বাউল শিল্পী। ফ্রান্সে বিভিন্ন নিউজ পেপার গুলোতে উনার সংবাদ এসেছে। বাউল গানের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে নাকি তিনি আঘাত করেছেন। রাজবাড়ির পাংশাতে, চুয়াডাঙ্গার জীবন নগরে বাউল শিল্পীদের দাঁড়ি গোঁফ কেটে দেওয়ার কথা কি মনে আছে আমাদের? আমার মনে আছে। শরীয়ত বয়াতির কথা কি আমাদের মনে আছে! মারফতি, মুর্শিদি, ভাববাদী, আল্লাহ তত্ত্ব, নবী তত্ত্ব এসেবের গানের কথার ভাব বোঝতে হয়। রূপক ভাবে অনেক কথাই এসব গানে বোঝানো হয়। কিন্তু এসবের কারণে একজনের বিরুদ্ধে মামলা ঠুঁকে দিয়ে তার কন্ঠ চেপে ধরতে হবে। বিবিসির দেওয়া সাক্ষাৎকার অনুসারে,বাংলাদেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে টাঙ্গাইলের বাউল রিতা দেওয়ানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল। পালা গানের মাধ্যমে বাউল রিতা দেওয়ান আল্লাহকে নিয়ে 'অশালীন উক্তি' করে 'ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত' দিয়েছেন এমন অভিযোগে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের হয়েছিল, যার মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের মামলায় বুধবার এই পরোয়ানা জারি হয়েছ...

বাউল গান ডিজিটালাইজড কেন?

 "'' IPDC আমাদের গান "" এই স্টুডিওর গান নিয়ে মেহরিন আফরোজ শাওন এবং চঞ্চল চৌধুরী তুমি হও যমুনা রাঁধে নিয়ে বেশ সমালোচনা ছিল। গানটি নিয়ে কোন আলোচনা সমালোচনা করিনি কারণ আমার খুব একটা জানা নেই। কিন্তু গতকাল একই প্লাটফর্ম এ শিউলি সরকারের গাওয়া প্রয়াত শাহ আব্দুল করিমের লেখা এবং সুর করা 'সখী তোরা প্রেম করিও না' গানটা শুনলাম। বারবার ফেম ফেম বলা হচ্ছিলো। হোয়াট ইজ ফেম? খাম হইতে হয় প্রেমের উদয়? এটাকি খাম, লেটার বক্স? একদম নয়, এটা হচ্ছে কাম অর্থাৎ অতি নিকবর্তী- সঙ্গম। একটা অক্ষরের কারণে কি ভাবার্থ কি হয়ে যাচ্ছে! বর্ণমালা 'ক' এর উচ্চারণ 'খ' করে এবং 'প' এর উচ্চারণ 'ফ' করলেই যে সিলেটি ধাচ এসে যাবে এমন কিন্তু নয়। সুনামগঞ্জ ভাঁটির সুর কিন্তু স্থানীয় সিলেটি উচ্চারণ থেকে ভিন্ন। দ্বিতীয়ত  বাউল শাহ আব্দুল করিম তার কোন গানে 'হ হ হ হ_____' করে উঠেন নি। স্টুডিও গানের কথায় 'রইল না' বলেছেন এবং মূল গানে 'থাকেনা' ব্যবহার হয়েছে। থাকেনা মানে হচ্ছে একদম নেই ফিরে আসবে না এরূপ বোঝানো হয়। রইল না হচ্ছে এই মুহুর্তে নাই, এমনটা। মূলত বাউল...

কাজী নজরুলের 'আমার পথ '

দ্রোহ, প্রেম, সাম্য ও সৌন্দর্যের কবি কাজী নজরুল ইসলাম৷ সত্য প্রকাশের দুরন্ত সাহস নিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যে আবির্ভুত হন৷  একহাতে বাঁশি আরেক হাতে রণতূর্য নিয়ে তাঁর অাগমন।  মূলত কবি হলেও বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তিনি বিচরণ করেছেন।  ' আমার পথ' প্রবন্ধটি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত প্রবন্ধগ্রন্থ ' রুদ্র-মঙ্গল ' থেকে সংকলিত।  এ প্রবন্ধে তিনি মানবমুক্তির অনুসঙ্গে অামিত্বের শক্তিকে জোরালো যুক্তি দিয়ে নিঃসংকোচ প্রকাশ করেছেন।  প্রাবন্ধিক এখানে অাত্মচেতনার অালোক বর্তিকা। তিনি নিজেই নিজের কর্ণধার। কোনো ভয়ের কাছে মাথা নত না করতে বলেছেন। নিজের চেনা পথ, চেনা বিশ্বাসের পথে চলতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, পথ দুটি। অালো এবং অন্ধকার। সত্য মানুষকে অালোর পথে টানে অার মিথ্যা, বিভ্রান্তি অন্ধকারে নিয়ে যায়। কারো দাসত্ব করা যাবে না। ভন্ডামি ত্যাগ করতে হবে।  গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস বলেছেন, know thyself অর্থাৎ নিজেকে জানো। প্রাবন্ধিক এই দার্শনিক তত্বের অালোকেই যেন পাঠককে জানাতে চান, নিজেকে চিনলে নিজের সত্যকে চেনা যায়। নিজেকে চিনলে অাপনা অাপনি মনের মধ্যে একটা শক্তি অাসে।  ভুলের মধ্য...

অনলাইন টিভি লাইভ, কি ভাবছি ?

অসংখ্য লাইভ প্রতিদিন দেখতে হয়। বিশেষ করে অনলাইন টিভি লাইভ। আসলে অনলাইন টিভি কি ? ব্যাপারটা আমি এখনো পরিষ্কার নই! টেলিভিশন সম্প্রচার হলে ত ২৪ ঘন্টা সাত দিন সম্প্রচার থাকবে। অথবা চ্যানেল হলে বা ইউটিউব একাউন্ট হলে শুধু মাত্র ভিডিও ফুটেজ থাকবে। কিন্তু অনলাইন টিভি , না আছে ধারাবাহিক সম্প্রচার, না আছে শুধু মাত্র ভিডিও ফুটেজ! আসলে কি এই অনলাইন টেলিভিশন। একটি সম্প্রচার মাধ্যম করতে হলে ত নির্দিষ্ট গুণগত মান থাকবে, কিছু সম্প্রচার নীতি থাকবে। শুধু মাত্র একটি নিউজ বুম (মাইক্রোফোন) যদি টিভি রিপোর্টিং এর প্রতীক বা আইডেন্টি বা একমাত্র পরিচয় হয়ে যায় , তাহলে আমি আমরা বা আমাদের সমাজ এই মাধ্যম থেকে কতখানি উপকৃত হচ্ছি।  একটি ঘটনা কিছু দিন আগে দেখলাম। সিলেটের চৌহাট্টা এলাকায় বোমা সাদৃশ্য একটি ড্রিল ম্যাশিন নিয়ে তোলপাড় হলো। এই ঘটনার সর্বশেষ অবস্থা জানাতে হাজারো সাংবাদিকের ভীড় দেখা গেলো। এক নিউজের নামে একাধিক বুম! ব্যাপারটি বোঝলাম না আসলে প্রচার মাধ্যম সমাজের ভূমিকায় নাকি ঘটনা লাইভ টেলিকাস্টের ভূমিকায়। করোনা মহামরির পর থেকে লাইভ শব্দটা বিশাল ভাবে প্রচলিত। হ্যাঁ, লাইভ ভালো, তথ্য ছড়িয়ে দিতে হয় কিন্তু যখন ...

মহামারী করোনা ভাইরাস ও আমাদের সাম্প্রতিক দায়িত্বশীলতা এবং জবাবদিহিতা

করোনা ভাইরাস সংক্রামন থেকে দেশ তথা দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রয়াস কোন অংশেই কম ছিলনা, নিশ্চয়ই প্রশংসার দাবি রাখে। এই ভাইরাসকে পুজি করে অনেকেই লাভবান, মাস্ক, স্যানিটাইজার,  পিপিই সরবরাহকারী  কোম্পানিগুলো ব্যাপক লাভবান হয়েছে।আবার অন্যদিকে লাভবান হয়েছেন যারা গরীবের হক মেরে হজম করতে পেরেছে, করোনার সার্টিফিকেট ব্যবসাসহ আরো নানাবিধ কুকর্ম  যারা করতে পেরেছেন।  আবার অন্যদিকে যারা হারিয়েছেন নিজেদের আত্মীয় স্বজন, ছেলে, স্ত্রী,  বাবা, মা, দাদা, দাদী, নানা, নানী, কেবল তারাই বুঝবেন, আর মনে রাখবেন যে কি ক্ষতি তাদের হয়ে গেছে।  তাদের ও মনে থাকবে মধ্যবিত্ত পরিবারের যারা বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে প্রবাসে পাড়ি দিয়ে  বিনাবেতনে দেশে ফেরত এসেছেন, আবার যারা আজ পর্যন্ত হারিয়েছেন তাদের একমাত্র জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন বেসরকারি চাকুরী।  যাদের এই অন্তিমসময়েই শেষ হয়ে গেছে সরকারি চাকুরীতে আবেদন করার সময়সীমা। তারা বেশ মনে রাখবেন। আশার বাণী হল, একদম প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায়, যাদের শিক্ষার জ্ঞান নেই তারা ও কিছুটা হলে ও সচেতনতার বাণী শুনেছেন, এই ভাই...

বিভূতিভূষণের 'আহবান' ও হিন্দু মুসলিম সম্পর্ক

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশকিছু কালজয়ী উপন্যাস রচনার মাধ্যমে তিনি জয় করে নিয়েছেন বাংলাভাষী পাঠকের হ্রদয়। শুধু উপন্যাস রচনাই নয় ছোটগল্প রচনায়ও সমান দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।  গ্রামীণ জীবন ও প্রকৃতি, মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক, মানুষের সাথে প্রকৃতির সম্পর্ক তাঁর রচনার উপজীব্য বিষয়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদার মানবিক বোধের গল্পগুলোর মধ্যে 'অাহবান' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।  হিন্দু- মুসলিম ঐক্যের এক অনন্য ভাষ্য 'অাহবান' গল্প। সহজ সরল অাখ্যানভাগ সংবলিত এ গল্পের অসাধারণত্ব এর অন্তর্নিহিত মানবিক রস।  সম্পর্কের বাধনে ভিন্নধর্মের মানুষের মধ্যেও যে নিবিড় অাত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে তার উত্তম উদাহরণ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'অাহবান' ছোটগল্প।  একজন মুসলিম দরিদ্র বুড়ির স্নেহছায়ায় একজন হিন্দু যুবককে সন্তানের অাসন দিয়েছে। বুড়ি এখানে হয়ে উঠেছেন চিরায়ত মা। গল্পের শেষে বুড়ির দাফনের মধ্যদিয়ে সাম্প্রদায়িক চেতনার কবর রচিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণ চিন্তার মূলে কুঠারাঘাত করার জন্য এ ধরনের গল্পের মূল্য অনন্য।  বিংশ শতাব্দ...

নানকার বিদ্রোহ: বিদ্রোহীদের লাল সালাম

  সিলেট অঞ্চলের একটি কৃষক-আন্দোলন, যা ১৮ আগস্ট ১৯৪৯ সালে সংগঠিত হয়। জমিদারের ভূমিদাসদের একটি প্রথাকে "নানকার প্রথা" বলা হতো। বিংশ শতাব্দীর ২০-এর দশকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ১৯৫০ সালে জমিদার প্রথা বিলুপ্ত করার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। 'নান' ফার্সি শব্দ, এর অর্থ রুটি এবং 'কার' অর্থ যোগান বা কাজ করা; অর্থাৎ 'নানকার' শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয় সেসব কর্মীদের যারা খাবারের বিনিময়ে কায়িক শ্রম দান করে। কেবল খাবারের বিনিময়ে যে জমির ভোগস্বত্ব প্রজাদেরকে দেওয়া হতো সে জমিকেই নানকার জমি বলা হতো। এই নানকার প্রজারা ছিলো ভূমির মালিকের হুকুমদাস; প্রজাই নয় তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও বংশানুক্রমে ভূমি মালিকের দাস হতো। সাধারণত: নিম্নবর্ণের হিন্দুরাই; যেমন: কিরান, নম-শূদ্র, মালি, ঢুলি, নাপিত, পাটনি প্রভৃতি শ্রেণির লোকেরাই নানকার শ্রেণির প্রজা ছিল। নানকার একটি বর্বর শ্রম শোষণের প্রথা, অনেকটা মধ্যযুগীয় দাস প্রথার সঙ্গে তুলনীয়। প্রধানত সিলেটের বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ অঞ্চলে এই সামন্ত প্রথাটি প্রচলিত ছিল। সামন্ত ভূ-মালিকদের সিলেট অঞ্চলে মিরাশদার এবং বড় মিরাশদারকে জমিদার বলা হতো। জম...

একজন বীর প্রতিকের শেষ ইচ্ছা

একজন বীরপ্রতীকের শেষ ইচ্ছে আজও পুর্ন হলো না, প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বরাবর আবেদন। সিলেটের ৪ জন বীর প্রতিকের ১ জন . এম সি কলেজের সাবেক ভি.পি , ৭১ এর রণাঙ্গনের সম্মুখ সমরের যুদ্ধা - বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বীর প্রতিক , বাড়ি - আগ্নপাড়া , দেওকলস , বিশ্বনাথ সিলেট । এই দেশপ্রেমিক মহান মুক্তিযোদ্ধার নিজ গ্রামের মুল সড়ক পাকা করণের জন্য বার বার ধর্ণা দিতেহচ্ছে। অথচ দেশে কত বড় বড় প্রকল্প হয় , কিন্তু আফসোস উনার গ্রামের একটি সড়কের ব্যাপারে নিরব বিশ্বনাথ উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তারা ! কী কারনে আজ পর্যন্ত উন্নয়ন বঞ্চিত এ এলাকা ——- বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের আগ্নপাড়া রাস্তাটি গুদামঘাট-আগ্নপাড়া-মজলিসপুর পর্যন্ত আড়াই কিঃ মিঃ রাস্তা। উক্ত রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক যাতায়াত করেন। রাস্তাটি দ্রুত পাঁকা করনের জন্য এলাকাবাসী সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান। জানাযায় আগ্ন পাড়া গ্রামে রয়েছে ৩৬০ আউলিয়ার সফর সঙ্গী ঐসৎ শাহের মাজার ও আহমেদ পীরের মাজার রয়েছে। এই গ্রামে জন্মগ্রহন করেন সিলেটের ৪ জন বীর প্রতিকের একজন বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম ও প্রবা...

'চাষার দুক্ষু' ও পুঁজিবাদী ব্যবস্থা

ক্ষুধার জ্বালা কত বড় জ্বালা, সেটা তো মানুষ জানে। অামাদের সে জ্বালা দূর করে কে? - অামাদের কৃষক। কাজেই কৃষকদের অামাদের মাথায় তুলে রাখা উচিৎ বলে অামি মনে করি।  এই কথাগুলো ২০১৬ সালে কৃষকদের এক সমাবেশে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এর প্রায় ১০০ বছর অাগে নারী জাগরনের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন- ক্ষেতে ক্ষেতে পুইড়া মরি রে ভাই পাছায় জোটে না ত্যানা বৌ এর পৈছা বিকায় তবু ছেইলা পায় না দানা।  তিনি 'চাষার দুক্ষু' প্রবন্ধে ওই সময়ের কৃষকের দুর্দশার চিত্র ও মুক্তির পথ বর্ননা করেছেন।  কুষকের অবস্থা ১০০ বছর অাগে যা ছিল অাজো তাই অাছে। কৃষক দেশকে খাদ্যে স্বনির্ভর করে,  কিন্তু তাঁর দারিদ্রতা কখনো দূর হয় না। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়ে, মাথাপিছু অায় বাড়ে, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়ে কিন্তু কৃষকের কোনো উন্নতি হয় না।  এর জন্য দায়ী পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। কৃষককে সব সময় বেশি দামে কিনতে হয় এবং কম দামে বেঁচতে হয়।  'চাষার দুক্ষু' প্রবন্ধটি তৎকালীন দারিদ্রপীড়িত কৃষকদের বঞ্চনার  মর্মন্তুদ দলিল। ভারতবর্ষের সভ্যতা ও অগ্রগতির ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি দেখিয়েছেন, সেখানে কৃষকদের অব...

৭০ দশকের চলচ্চিত্রে ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা ( ভালোবাসার ফেঞ্চুগঞ্জ, পর্ব ৪)

  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি চলচ্চিত্রের ভিডিও ফুটেজের ছবিতে ফেঞ্চুগঞ্জ নাম দেখে চোখ লেপ্টে গেলো অখানেই। বেশ অবাক হলাম, কি ব্যাপার ফেঞ্চুগঞ্জ এর নাম এখানে কেন। গত দুদিন থেকে এটা নিয়ে বেশ ঘাঁটাঘাঁটি করে ফলাফল পেয়ে গেলাম। বেশ কিছু ইতিহাস খুঁজে বের করলাম ৭০ এর দশকে সাড়া জাগানো বাংলা ছায়াছবি 'বিনিময়' চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছিল আমাদের ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানায়। পরবর্তীতে চলচ্চিত্রটি দেখে পুরো কনফার্ম হলাম এই ছায়াছবির প্রায় আশিভাগ শুটিং হয়েছে আমার জন্মস্থান, প্রিয় ফেঞ্চুগঞ্জ এ।  চলচ্চিত্রটি দেখে জানলাম, ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা, মনিপুর চা বাগান, উত্তরভাগ চা বাগান, চানভাগ চা বাগান,  ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার অফিসার্স ক্লাব, ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার প্রবেশ পথ পুরান বাজার রেল লাইন, ছায়ানীড় সিনেমা হল,গেস্ট হাউজ এবং ফেঞ্চুগঞ্জ সারখানার ভেতরে অনেক শুট নেওয়া হয়েছে ছবিতে।  ছায়াছবির বায়োডাটা ঘেটে জানা যায়, ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানার অফিসার্স ক্লাবের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেই সেখানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানায় কর্মরত আমাদের অনেক শ্রমিক বাবা চাচারা তৎকালীন সময়ে ছায়াছবিটির শুটি...

বঙ্কিম চন্দ্রের 'বিড়াল' ও আজকের সমাজ ব্যবস্থা

বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়।  তিনি বাংলা উপন্যাসের প্রথম সার্থক স্রষ্টা। 'সাহিত্যসম্রাট' হিসেবে পরিচিত বঙ্কিম বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ।  যারা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে স্বীয় কীর্তি দ্বারা অমর হয়ে অাছেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় অন্যতম। বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়ের হাস্য- রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী রচনার সংকলন ' কমলাকান্তের দপ্তর'। তিন অংশে বিভক্ত গ্রন্থটিতে যে কটি প্রবন্ধ রয়েছে তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য 'বিড়াল'। একটি বিড়ালকে রুপক হিসেবে ব্যবহার করে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতিবাদ ও অধিকারকে লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়৷ সাম্যবাদবিমুখ ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষে একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায় বিড়ালের মুখ দিয়ে শোষক- শোষিত, ধনী -দরিদ্র, সাধু- চোরের অধিকারের কথা শ্লেষাত্মক, যুক্তিনিষ্ট ও সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন। রচনার শুরুতে দেখা যায়, অাফিংয়ের নেশায় বুঁদ হয়ে শয়নগৃহে চৌকির উপর বসে কমলাকান্ত ওয়াটার্লু যুদ্ধ নিয়ে ভাবছিলেন। হঠাৎ বিড়ালের একটা 'মেও' শব্দে ধ্যান ভাঙ্গে। কমলাকান্ত দ...

আমাদের শৈশবের ঈদ

লিখেছেন- চৌধুরী মারূফ, সাংবাদিক আমাদের শৈশবে ঈদ ছিল শীতের সময়। ডিসেম্বর এর শেষ বা জানুয়ারির দিকে। প্রচণ্ড শীত থাকতো। কোরবানি ঈদের দশ পনেরো দিন আগে থেকেই বাবার সাথে বায়না, পশুর হাঁটে নিয়ে যেতে হবে। একবার আমাদের পাশ্ববর্তী মুন্সিবাজারে গিয়েছিলাম পশুর হাঁটে। গরুর গোবরে পা পিছলে পড়ে যা'তা অবস্থা। বাবা রেগে গিয়ে বললেন - "না করছিলাম আইতো না, হারমাদ হারাম যদি আমার কথা হুন্ত"।  সিলেটি ভাষায় বাবার সেই রাগ আজ হাহাকার করে খোঁজে বেড়াই। আমাদের ঠিক সামনের প্রতিবেশিরা হিন্দু ধর্মের ছিলেন। সুশান্তদের বাসা। তাদের বা দুই বাসা পরে প্রদীপদের যাতে প্রব্লেম না হয় আমাদের বাসার পাশের পাহাড়ি খালের পারে ব্যবস্থা করা হতো কোরবানির। একবার ঈদের দিন তাড়াহুড়া করে কোরবানি দেখতে যাব, বয়স আমার চার বা পাঁচ। গরুর রক্তে স্লিপ করে সাদা পাঞ্জাবি একবারে কালারফুল লাল। বাবা একবারে ঘাড়ে ধরে পাখির মত বাসায় নিয়ে এসে থাপ্পড়। " তরে না করছিলাম যাইতে, কোরবানি দেকরার গরো দেকরা, আনামাতি গরো বৈ র। ১ হাজার টেখার পাইঞ্জাবি বিনালে গেলো"। আহ, আজ এসব কথা বলার কেউ নাই। আমাদের বাসায় একজন কাজের বুয়া ছিলেন।উনার নাম ...

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অপরিচিতা’

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে ছোটগল্পের সার্থক স্রষ্টা৷ বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে রবীন্দ্রনাথ নেই। সাহিত্যের নানা আঙ্গিক নিয়ে তিনি পরীক্ষা করেছেন। ছোটগল্প তাঁর সেই বিচিত্রমুখী প্রতিভার অভিজ্ঞান৷ জীবনের সমগ্র রুপ নিয়ে নয়, ছোটগল্প জীবনের খন্ডাংশ নিয়ে রচিত৷ এখানে প্রতিফলিত হয় ছোট ছোট সুখ-দুঃখ, দৈনন্দিন জীবন প্রণালি। সাধারণ ও মধ্যবিত্তের মানবীয় ও সামাজিক টানাপোড়েনের কাহিনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অপরিচিতা’ গল্প উনিশ- বিশ শতকের সমাজ জীবনের প্রতিচ্ছবি। ‘অপরিচিতা’ গল্পের নায়ক অনুপম। নায়ক হলেও তার মধ্যে নায়কোচিত গুণতো নেইই, পুরুষোচিত গুণেরও অভাব ছিল। শিক্ষিত হলেও সে ছিল ব্যক্তিত্বহীন। অন্যদিকে নারী চরিত্র কল্যাণী ও তার বাবা শম্ভুনাথ সেন ছিলেন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন নি কখনো, মাথা নত করেন নি। গল্পে অনুপমের লোভী মামার অশোভন আচরণ তৎকালীন বাঙালি সমাজকে প্রতিফলিত করেছে। গল্পের শুরুতে অনুপমের পরিচয় পাওয়া যায়, অনুপম দেখতে সুশ্রী ছিল। কিন্তু গুণহীনতার কারণে শিক্ষক তাকে শিমুল ফুল ও মাকাল ফলের সাথে তুলনা করতেন। পিতার মৃত্যুর পর মায়ের স্নেহেই অনুপম বড় হয়।...

করোনায় আমরা আমজনতা

নভেল করোনাভাইরাস। চীনের উহানে প্রথমে শনাক্ত হওয়া এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও অঞ্চলে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এখানেও বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। সারাবিশ্বে মহামারী আকার ধারণ করেছে কোভিড-১৯। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ও সচেতনতার অভাবে বাংলাদেশ ও মরণব্যাধি করোনায় চরম মূ্ল্য দিচ্ছে।অথচ বাংলাদেশ সরকার এই মহামারী থেকে দেশের মানুষকে বাচানোর জন্য আপ্রাণ প্রয়াস কোন অংশেই কম ছিলনা।কিন্তু আমরা নিজেরাই নিজেদের করুণ অবস্থার জন্য দ্বায়ী। চিং উহাং করোনা আমাদেরকে অক্টোপাসের মতো চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে, ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে, একেবারে নাকের ডগায়, পালাবার আর পথ নেই, এখন লড়াই করেই বাঁচতে হবে!পাড়া মহল্লায়, অফিস আদালতে, পরিচিত বন্ধু বান্ধব ও সহকর্মীদের মাঝে ক্রমশ আক্রান্তের খবর পাচ্ছি। মৃত্যুর খবর শোনার জন্য টিভির পর্দায় ও র্স্মাট ফোনের নিউজ ফিডে চোখ রেখে গা শিউরে উঠলে ও সতর্কতা নেই বললেই চলে। আবার, মফস্বলে করোনায় পজিটিভরা সামাজিক ও  মানুষিকভাবে হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন বলে ও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।এত ...

বীভৎসতার চাষবাস: মুক্তি কত দূর?

কার্টুনিস্ট আহম্মেদ কবির কিশোরের একটা কার্টুন আছে এরকম- মা বিড়াল তার বাচ্চাকে 'আমি বৃদ্ধ হলে তুই কি আমায় বনে ফেলে আসবে?' জিজ্ঞেস করলে বাচ্চা বিড়ালের উত্তর: আমি কি মানুষের বাচ্চা?'মানুষ তো এক সময় বন-জঙ্গলে থাকতো। জীবজন্তু যেমন থাকে। পুরো পলীয় যুগে বা পুরাতন পাথরের যুগ পর্যন্ত তারা ফলমূল আহরণ করে খেতো। জীবজন্তু শিকার করে খেতো। কারণ ততদিন পর্যন্ত মানুষ কৃষি কাজ করতে শেখেনি। পাথরকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতো। গাছের ডালপালাও। নিজেদের বুদ্ধিবৃত্তিক কৌশল কাজে লাগিয়ে তারা সবার চেয়ে এগিয়ে যায়। চিন্তার শক্তি দিয়ে একে একে ধরাশায়ী করে সব জীবজন্তুকে। নতুন সৃষ্টির সক্ষমতায় গড়ে তুলে বসতি। কাপড় চোপড় পরে শাসন করতে থাকে পৃথিবী। ইচ্ছে মতো প্রকৃতি আর প্রাণিকে খতম করে করে নিজেদের হিংস্রতার ইতিহাস জানান দেয়।প্রকৃতিতে এক প্রাণি অন্য প্রাণিকে খায়। এটা চলে আসছে প্রাণির সৃষ্টি থেকে। মানুষও খাচ্ছে প্রায় সব প্রাণিকে। বিজ্ঞান যাকে খাদ্যশৃঙ্খল বলে। তাহলে প্রাণি হত্যায় হৈচৈ কেন?  আমরা যারা গ্রামাঞ্চলে বেড়ে ওঠেছি তাদের অনেকেরই বিভিন্ন ধরনের সাপের সামনে পরার অভিজ্ঞতা আছে। একেবারে সাপের উপর পরে গেলে হয়...

করোনা পজিটিভ ও করোনার পজিটিভ

পৃথিবী চুপচাপ! নীরব আতঙ্কে চুপ হয়ে গেছে শক্তি প্রদর্শনের জায়গা এ পৃথিবী! করোনা নামক অতি ক্ষুদ্র একটা ভাইরাস সুবিশাল পৃথিবীর শক্তিশালী অস্ত্রগুলোতে জং ধরিয়ে দিয়েছে। পারমানবিক শব্দটাও কাগজের পাতায় ঠাই পায়না বহু দিন। বিশ্বের মত বাংলাদেশেও অপরাধ প্রবণতা কমে এসেছে বহুলাংশে। এসব করোনার পজিটিভ। কিন্তু করোনা পজিটিভ হয়ে মহা বিপদেই পড়ছেন মানুষজন। আজ শুধু বাংলাদেশ নিয়েই বলি। বাস্তবিক ভাবেই আমরা গরীব দেশের নাগরিক। আমাদের সীমাবদ্ধতা খুব বেশি। মানুষ মৌলিক অধিকার পাওয়ার অধিকারই হয়ে গেছে উচ্চশ্রেণীর। উচ্চশ্রেণীর লোকজন যখন সাধারণ চেকআপ করাতেই বিদেশে উড়াল দেন তখন আমাদের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার অবস্থার উপর আস্থা রেখে নাস্তানাবুদ হয়ে রাস্তা হারানোর মত দুরবস্থা হয়। এবার এই করোনা প্রকাশ করে দিল আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনার কত চিত্র। চিত্র বিচিত্র স্বপ্ন দেখা আমরা জানলাম দায়িত্বশীল বড় বড় অধিদপ্তরের দাপ্তরিক কত সমন্বয়হীনতা! করোনা ঠেকাবার প্রস্তুতির বাক্য-ঝুরি শুনে আশ্বস্ত হওয়া আমরা পরাস্ত হলাম অব্যবস্থাপনার খেয়ালি-পনায়! করোনা দরজায় ঠুকা দেওয়ার পর, আক্রমণ করার পর আমরা জানলাম করোনা যুদ্ধের অ...

নারীর ভয় শুধু করোনাতেই নয়

সারা বিশ্ব এখন টালমাটাল। লড়ছে সবাই। মৃত্যু, খাদ্যসংকট ও চিকিৎসার মতো অতি জরুরি বিষয়ে সামাল দিতেই পুরো দুনিয়া কাঁপছে। বেঁচে থাকার জন্য এত বড় হাহাকার এই জমানা কখনো দেখেনি। জীবন রক্ষার প্রাথমিক অস্ত্র হিসেবে সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। এই ঘরে থাকার অর্থ আসলে কী দাঁড়াচ্ছে? নিজে নিরাপদে থাকুন, পরিবার বা ভালোবাসার মানুষদেরও নিরাপদে রাখুন। কয়েক দিন আগে আমার এক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কেন ছেলেরা লকডাউনে বাইরে বের হচ্ছে? শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীজুড়েই লকডাউন মানাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারপ্রধানদের। শুধু তা-ই নয়, দুনিয়াজুড়েই এই লকডাউনে বেড়ে চলছে নারী নিপীড়ন। বিশ্বে এই করোনার সময় লকডাউনে নারী নির্যাতন ২০ ভাগ বেড়েছে ৷ বাংলাদেশও তার বাইরে নয় ৷ আর এখানে স্বাভাবিক অবস্থায়ও নারীর প্রতি সহিংসতা বেশি ৷ করোনার সময় এখন পুরুষেরা ঘরে থাকছেন ৷ পরিবারের সব সদস্য ঘরে থাকছেন ৷ আর তাতেই নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। এর আসল কারণ কী? জীবনে বেঁচে থাকাটাই যখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তখন এই নিপীড়ন/নির্যাতনের কারণ কী? এই বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশের ব্...

বর্ণবাদের কারণে পৃথিবী নিশ্বাস নিতে পারছে ত ?

বর্ণবাদ শব্দটি শুনলেই কেন যেন আমার শরীর ছমছম করে। সাদা কালো মারামারি, বৈষম্য, মানুষের শরীরের চামড়া নিয়ে আঁড় চোখে তাকানো কখনো আমি মেনে নিতেই পারিনা। বর্ণবাদ কেন যেকোন ধরনের ধর্মীয় সামাজিক গোঁড়ামি আমার একদম অপছন্দ। আসলে বর্ণবাদ কথা বলতে চাচ্ছি যুক্তরাষ্ট্রের সমসাময়িক একটি ঘটনা নিয়ে । যুক্তরাষ্ট্রের কর্তব্যরত একজন পুলিশের নির্যাতনে একজন কৃষাঙ্গ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এক যুবককে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে নির্যাতন করছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। জর্জ ফ্লোয়েড নামের ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক বাঁচার আকুতি জানিয়ে বারবার বলছিলেন, আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এটা ত সমসাময়িক ঘটনা। ২০১৬ সালের জুন মাসের একটি ঘটনা মনে আছে কি আমাদের! টেক্সাস রাজ্যের ওয়াকোতে একটি বেসরকারি স্কুলে সহপাঠীদের হাতেই ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছে এক কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থী। শ্বেতাঙ্গ সহপাঠীরা গলায় দড়ি পেঁচিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় ১২ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থীকে। লাইভ ওক ক্লাসিক্যাল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির...

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন এবং সাংবাদিক নির্যাতন

কথা বলছিলাম একজন সাংবাদিকের সাথে। ২০১৫ সালের কথা, যিনি সিলেট বিভাগের জাতীয় এবং স্থানীয় অনলাইন জার্নাল এবং প্রিন্ট পত্রিকার প্রতিনিধি। কথার প্রসঙ্গে চলে আসলো একটি মামলার প্রসঙ্গ। তিনি জানালেন, ২০১৫ সালে তিনি পরিবেশ নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এই সংবাদ প্রকাশ করার পর তার বিরুদ্ধে সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করার অভিযোগে মিথ্যা মামলা হয়েছিল। রাতের আঁধারে সাদা পোষাকের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থানায় তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাকে অহেতুক হেরেসমেন্ট করা হয়েছিল সেই দিন রাতে থানায়। এখনো তিনি সেই মামলার কারণে কোর্টে রেগুগার হাজিরা দিতে হচ্ছে। এই হচ্ছে আমাদের স্থানীয় সাংবাদিকের জীবন। ৬ এপ্রিল ২০১৩ সালের কথা মনে আছে!  ঢাকায় পেশাগত কর্তব্যে নিয়োজিত নারী সাংবাদিকদের ওপর হেফাজতে ইসলামের সমর্থকদের হামলার কথা আরও একবার স্মরণ করলাম। এ হামলা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং সাংবাদিকদের তথ্য-অধিকারের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। বাংলাদেশে ইদানিং ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের কালো থাবায় জর্জরিত সাংবাদিক মহল। শুধু সাংবাদিক নন, লেখক, ব্লগার, আলোকচিত্রী কেউ নিরাপদ নন। ইদানিং কোভিড ১৯ কালীন অবস্থায় বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে ...

হবিগঞ্জ যেন মগের মুল্লুক!

আইসিটি আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে হবিগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার  প্রকাশক ও সম্পাদক সুশান্ত দাশ গুপ্তকে। সকাল থেকেই আসলে বিক্ষপ্ত অবস্থায়।  লিখবো কি লিখবো না খুবই  দ্বিধান্বিত ছিলাম। কারণ পক্ষে বিপক্ষে অনেকেই লেখছেন।  তাঁর মুক্তি দাবী করছেন দেশে বিদেশে অনেকেই। পুলিশের কাজ পুলিশ করেছে। অপরাধ করলে আটক করবে সেটাই স্বাভাবিক নিয়ম। মাত্রই দুইদিন আগে এক টেলিভিশন টকশোতে আইসিটি আইন নিয়ে কথা বলছিলাম, আমার সহ আলোচক এইটি কালো আইন, বাতিল করতে হবে এই দাবীতে কথা বলছিলেন। আমি বলেছিলাম যারা  সংসদে আইন প্রণয়ণ করেন তাঁরা নিশ্চয় দেশ এবং জাতির কল্যাণের জন্যই আইনগুলো  পাশ করেন। তবে ভয়ের জায়গাটা হচ্ছে এর প্রয়োগ নিয়ে। উদাহরণ হিসাবে গুজব এবং সমালোচনার বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল। গুজব প্রতিরোধে এই জাতীয় একটা আইনের হয়তো প্রয়োজনীয়তা রয়ে গেছে কিন্ত সমালোচনার জন্য নিশ্চয় এই আইনটি ব্যবহার হবে না। দুইদিন না যেতেই সেই অপপ্রয়োগটা দেখতে পেলাম আবারো। মামলার আবেদন এবং আদালতে দেয়া পুলিশের প্রতিবেদনগুলোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আসলে জানতে চাইছিলাম আমার হবি...